Monday, September 26, 2011

দুর্নীতিবাজ কাউকে ছাড় দেয়া হবে না ॥ শেখ হাসিনা


গণসংবর্ধনা নিউইয়র্কে
নাজনীন আখতার, নিউইয়র্ক থেকে
দুর্নীতিবাজ কাউকে ছাড় দেয়া হবে না শেখ হাসিনা

দেশে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুর্নীতিবাজ কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় রবিবার বিকেলে ম্যানহাটানে হিলটন হোটেলের বলরুমে এক সংবর্ধনাসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেন।
সংবর্ধনাসভায় শেখ হাসিনা প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যাঁরা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের কাউকেই ছাড়া হবে না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জঙ্গীবাদকে কঠোরভাবে দমন করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন আর দুর্নীতি জঙ্গীবাদের দেশ নয়।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বলে উলেস্নখ করেন তিনি। সে সময় তিনি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, সরকার রাজস্ব, রফতানি আয় এবং প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করেছে। ২৬টি নতুন বিদ্যুত কেন্দ্র করা হয়েছে। আরও ৩৪টির কাজ চলছে। নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের মাধ্যমে গ্যাসের উৎপাদন বেড়েছে। কৃষির উন্নয়ন ঘটেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে।
সবকিছুই করা হচ্ছে জনগণের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা পায়। জনগণ অর্থনৈতিক মুক্তি পায়। বিদ্যুত, পানি, গ্যাস সমস্যার সমাধান হয়। তিনি বলেন, ক্ষমতার কোন মোহ নেই আমার। আমি অনেক উত্থান-পতন দেখেছি। জনগণের সেবক হিসাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছি। পরনির্ভরশীলতা নয়, আমরা আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসাবে দাঁড়াতে চাই।
সংবর্ধনাসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে দেশের কোন উন্নয়ন হয়নি। তারা সন্ত্রাস আর দুনীর্তি করেছে। প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল প্রসঙ্গে বলেন, এটা সংবিধানবিরোধী বলেই হাইকোর্টের রায়েই তা বাতিল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার জন্য আমরাই প্রথম আন্দোলন করেছিলাম। এখন খালেদা জিয়া এর জন্য আন্দোলন করছেন। আমার ভাল লাগছে। এক সময় তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার দাবি পাগলের প্রলাপ। পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ হতে পারে না। তবে কী এখন খালেদা জিয়া পাগল শিশু খুঁজে পেয়েছেন?
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে বার বার সামরিক সরকার ক্ষমতা দখল করেছে। ওয়ান-ইলেভেনপরবতর্ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাও আমরা দেখেছি। সেখানে সবই বিএনপির লোক ছিল। বিএনপির শাসনামলেই ফখরম্নদ্দীনকে তারা এনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর করেছিল। সে সময় অনেক টাকা বিদেশে তারা পাচার করেছিল। অফিসারকে ডিঙ্গিয়ে মইনকে সেনাপ্রধান করেছিল। ভেবেছিল, ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় থেকে যাবে। রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন তো ছিল ইয়েসউদ্দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দু'বছর ৰমতায় থেকেছিল। কে জানে, আগামীতে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা না ছাড়তে চায়। তাই আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছি। স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের আওতায় আগামী নির্বাচন হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই পারে উন্নয়নের রাজনীতি জনগণকে উপহার দিতে। দেশের মানুষ এখন শানত্মিতে আছে। শুধু সন্ত্রাসী আর দুনর্ীতিবাজরা শানত্মিতে নেই। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদু্যত সমস্যার অনেক অভিযোগ শুনতে পেয়েছিলাম। গত এক বছরে অভিযোগ পাচ্ছি না। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক খালিদ হাসানের সভাপতিত্বে সংবর্ধনাসভায় বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রম্নহুল হক, গৃহায়ন গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, মির্জা আজম, . আবুল বারকাত, অধ্যাপক খালিদ হাসান, সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, নিজাম চৌধুরী নাজমুল ইসলাম।
এদিকে এদিন নিউইয়র্কে হিল্টন হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলাকালে হোটেলের বাইরে বিক্ষোভ করে বিএনপি জামায়াত। জামায়াত সমর্থিত মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার নেতাকমর্ীরা বর্তমান সরকারের কর্মকা-কে মানবতাবিরোধী স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর পদতাগ দাবি করে। গ্রেফতারকৃত জামায়াত নেতাদের মুক্তিও দাবি করে।
কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাৰাত রবিবার নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ারম্যান জোসেফ ক্রাউলি। সূত্র মতে, সাক্ষাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল বিরোধী দলের সংসদ বর্জন বিষয়ে জোসেফ ক্রাউলি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান। এছাড়া দু'দেশের সম্পর্কোন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়

No comments:

Post a Comment