Thursday, March 10, 2016

গনতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক।





গনতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনটি এ দেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ও গনতন্ত্রের যাত্রাকে অব্যাহত রাখতে একটি গুরত্বপূর্ণ এবং অন্যান্য মাইলফলক। বাংলাদেশের জনগন দেশের স্বার্থে সবসময়ই অত্যন্ত সক্রিয়।চলমান উন্নয়ন পক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষায় প্রয়োজন জনগনের সক্রিয় অংশগ্রহন,সহযোগিতা এবং যথাযথ সমন্বিত উদ্যেগ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যেগের কারনে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলসমূহ অর্জনে সাফল্য দেখিয়েছে এবং জাতীয় আয় ও বাজেটে বরাদ্দ উল্লেখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি করতে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরন ঘটেছে নিম্ন আয় থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে। এ ছাড়াও কৃষি,শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্নখাতে ব্যাপক উন্নতি অর্জিত হয়েছে। অয়ান্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্বীকৃতি অর্জন করায় সারা বিশ্বের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সাফল্য আজ প্রমানিত। এই সাফল্য ও স্বীকৃতির সমন্বয়ে বর্তমান সরকার রুপকল্প (ভিশন) ২০২১ অর্জনে বদ্ধপরিকর। 

গত দুই বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে ও অগ্রগতির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে দেয়া হলঃ 
অর্থ, বানিজ্য ও পরিকল্পনাঃ
গত দু'বছরে গড় প্রবৃদ্ধির হারছিল ৬.৩ শতাংশ। এছাড়া মাথাপিছু আয় বেড়ে ১৩১৪ মার্কিন ডলার, রিজার্ভ প্রায় ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রেমিট্যান্স ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সিদ্ধান্তের ফলে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অবসরকালীন সুবিধাদি উল্লেখ্যযোগ্য পরিমানে বৃদ্ধি করে ইতিমধ্যে জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের তুলনায় বাজেটের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশ এবং বার্ষিক উন্নয়ন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৫ শতাংশ। Financial reporting act ২০১৫ অনুমোদন করাও সরকারের বিরাট সফলতা।
বর্তমানে ১৯৬টি দেশে ৭২৯টি পণ্য রপ্তানি করে আয় হচ্ছে ৩১।২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ WTO তে LDC কোঅর্ডিনেটরের ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত ১১টি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে সেবাখাতে প্রেফারেনশিয়াল সুবিধা দিচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে গত দুবছরে ৩৮ হাজার ৮শ ৮৩ মেট্রিক টন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ন্যায্যমূল্যে বিক্রয় করা হয়। খাদ্যদ্রব্যের গুনাগুন বজায় রাখার লক্ষ্যে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।
গত দুবছরে ৬২টি একনেক বৈঠকে ৪২৯৮০৪.৪৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি দারিদ্র্য নিরসনের সাথে প্রত্যেক নাগরিকের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন (২০১৬-২০২০) করা হয়েছে।

শিক্ষাঃ
দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উপবৃত্তি ও বেতন মোকুফ সহায়তা হিসেবে ৪৯লক্ষ ২৩ হাজার ৪৮৫ শিক্ষার্থীকে ৮৮০.২৭ কোটি টাকা বিতরন করা হয়। জাতিসংঘের বেধে দেয়া সময়সীমার তিন বছর আগেই ২০১২ সালে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাগত সমতা অর্জন করে। এটি সম্ভব হয়েছে মহাজোট সরকারের কঠোর পরিশ্রম ও আন্তরিকতার ফলে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনের অংশ হিসেবে ১০০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৩.১১ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। ঢাকায় একটি অটিস্টিক একাডেমী স্থাপনের জন্য পৃথকভাবে দুটি হোস্টেল নির্মান করা হবে যেখানে প্রতিটিতে ১০০ জন অটিস্টিক শিশুর আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। অটিজম বিষয়ক বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারপার্সন্ম সায়মা ওয়াজেদ এর আন্তরিক ও কঠোর পরিশ্রমে দেশের ওটিস্টিক ছেলে-মেয়েদের কল্যানে কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।
২০১৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নীট ভর্তির হার ৯৭.৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ঝরে পড়ার হার হ্রাস পেয়ে ২০.০৯ শতাংশে দাড়িয়েছে। ২০১৫ শিক্ষাবর্ষে প্রায় ২.২৩ কোটি শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১ কোটি ৫৯ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৭টি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের দপ্তরসমূহে ইন্টারনেট সংযোগসহ ৫৫টি পিটিআইতে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। ৫ হাজার ৪৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ, মাল্টিমিড়িয়া,ইন্টারনেট মডেম ও সাউন্ড সিস্টেম সরবারহ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনঃ
বিভিন্ন সূচকে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রতিফলিত হচ্ছে। মানুষের গড় আয়ু ৭০।৭ বছরে উন্নীত হয়েছে। অনুর্দ্ধ ৫ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর হার কমে প্রতি হাজারে ৪১ জনে দাড়িয়েছে। মাতৃমৃত্যু হারও কমে প্রতি লক্ষে ১৭০ জনে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পোলিওমুক্ত দেশ হিসেবে সনদ লাভ করে। ৫টি আর্মি মেডিকেল কলেজসহ ১২টি সরকারি মেডিকেলে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রায় ৪০টি হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকায় জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউট নির্মানের লক্ষ্যে প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। প্রায় ৬৩০০ চিকিৎসককে নিয়োগ দিয়ে উপজেলা পর্যায়ে পদায়ন করা হয়েছে। মবাইল ফোনে ১৬২৬৩ নম্বরে ২৪ ঘন্টা স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রস্তাবিত অটিজম ও স্নায়ু বিকাশজনিত প্রস্তাবনা পাস হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর গত দুই বছরে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৩১৮টি উৎপাদন নল্কূপ,৩৪টি পানি শোধানাগার, ১৯টি উচ্চ জলাধার,৭৪৩ কিলোমিটার বিভিন্ন ব্যাসের পাইপ লাইন, ৮৪০৩টি স্যানিটারি ল্যাট্রিন, ১৯০টি কমিউনিটি ল্যাট্রিন-পাবলিক টয়লেট স্থাপন করেছে।
কৃষি, খাদ্য ও শিল্পঃ
২০১৪-১৫ সালে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছে ৩৮৪।১৮ লক্ষ মেট্রিক টন। উৎপাদনের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রায় ৭ হাজার ১০১ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। খামার যান্ত্রিকীকরনে ৩০শতাংশ ভর্তূকিতে যন্ত্রাংশ সরবারহের জন্য ১৭২।১৯ কটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন্সহ হাওড় অঞ্চলে কৃষিযন্ত্র সরবারহের জন্য ১০।৬০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। গত দুই বছরে খরা,বন্যা, লবনাক্ততা সহনশীলসহ রোগ প্রতিরোধক্ষম এবং উচ্চ ফলনশীল ৬৪টি জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। কৃষকদের জৈবসার ও প্রাকৃতিক বালাইনাশক ব্যবহারে উৎসাহিত করার ফলে নিরাপদ ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।
২০১৫ সালে দানাশস্যের উৎপাদন ৩৫।৬৮ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য মজুদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে অভ্যন্তরীন উৎস হতে ১২ লক্ষ টন চাল এবং ২ লক্ষ ৪হাজার মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০১৫ সালে মত খাদ্যশস্য মজুদ ছিল ১৫লক্ষ ৪৬ হাজার ৯৩৯মেট্রিক টন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মহাজোট সরকারের সময়ই শ্রীলংকায় ২৫হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানি হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ এই প্রথম অন্য দেশে চাল রপ্তানি করেছে। সরকারি খাদ্য বিতরন কর্মসুচির আওতায় ১১লক্ষ ২৭হাজার মেট্রিক টন চাল এবং ৪লক্ষ ৪৭হাজার মেট্রিক টন গম বিতরন করা হয়েছে। সরকারি খাদ্য গুদামের ধারনক্ষমতা ১৯লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। সান্তাহার সাইল ক্যাম্পাসে ২৫০০০মেট্রিক টন ধারনক্ষমতাসম্পন্ন বহুতল গুদাম নির্মান সম্পন্ন হয়েছে।
বর্তমানে মৎস্য উৎপাদনে গড়প্রবৃদ্ধির হার ৬.২৩ শতাংশ। প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ লোক মৎস্যখাত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে। রুপকল্প ২০২১ অর্জনে লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩৫.৪৮ লক্ষ মেট্রিক টন মৎস্য ও চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। দুই বছরে প্রায় ১৬৫ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত মাছ উৎপাদিত হয়েছে এবং ১.৬১ লক্ষ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে ৯.৫ হাজার কোটি টাকার বৈদশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ blue growth economyতে বাংলাদেশকে pilot country হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দুধের উৎপাদন ৬৯.৭০ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে মাংস ও ডিমের উৎপাদন যথাক্রমে ৫৮.৬ লক্ষ মেট্রিক টন ১ হাজার ৯৯ কোটি ৫২ লক্ষে উন্নীত হয়েছে।
ইউরিয়া সারের চাহিদা পূরনকল্পে বার্ষিক ৫ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন শাহজালাল সারকারখানা নির্মান প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। বিসিক ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশব্যাপী ক্ষুদ্র শিল্পে ৩৮৯০ ও কুটিরশিল্প খাতে ৮৯৩৪ জন সম্ভাবনাময় শিল্পোদ্যোক্তা চিহ্নিত করে তাদেরকে শিল্পস্থাপনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকার পরামর্শ – সেবা- সহায়তা প্রদান করে আসছে । বিএসটিআই এর ফুড, মাইক্রবায়োলজী, সিমেন্ট ও টেক্সটাইল ল্যাবরেটরি ভারতের National Accreditiation Board for Testing Laboratories (NABL) থেকে এক্রিডিটেশন লাভ করেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানীঃ
বিদ্যুৎ খাতে বর্তমান মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈর্ষনীয় সাফল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত দুই বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (গ্রীড কানেকটেড) ১০২৮৯ মেগাওয়াট থেকে ১১৯৫২ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৬৬৭৫ মেগাওয়াট। ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়ায় ৮১৭৭ মেগাওয়াট। ২০১৩ সালের মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩২১ কিলোওয়াট আওয়ার হতে বর্তমানেও ৩৭১ কিলোওয়াট আওয়ারে উন্নীত হয়েছে। দৈনিক গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২৭০০+ মিলিয়ন ঘনফুট হয়েছে এবং সাথে সাথে বিকল্প উৎস হিসেবে আমদানিকৃত তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) চিহ্নিত করা হয়েছে। Floating Storage Re-gasification Unit (FSRU) স্থাপনের জন্য Excelerate Energy (EE) Singapore এর কারিগরি সহায়তায় দৈনিক ৫০০ এমেমসিএফডি (MMCFD) ক্ষমতাসম্পন্ন LNG TERMINAL স্থাপনের কাজ শেষ হলে ২০১৭ এ জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ যুক্ত করা সম্ভব হবে।
সড়ক-সেতু, রেল, নৌ ও স্থানীয় যোগাযোগ অবকাঠামোঃ
পদ্মা সেতুর মূল সেতু নির্মান এবং নদী শাসনের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি সার্ভিস এরিয়া, কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড নির্মান সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের কাজ প্রায় ২৮ ভাগ শেষ হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল নির্মানের প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চট্রগ্রামের কর্নফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল নির্মানে চীন সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ঢাকা- চটড়্গ্রামমহাসড়কের ১৯২ কিলমিটার এর মধ্যে ১৮৪ কিলোমিটার চারলেনেউন্নীতিকরন কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। পার্বত্য চট্রগ্রামে ২২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬টি মহাসড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে। ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ থানচি- আলিকদম মহাসড়কটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। সিলেটে সুরমা নদীর উপর কাজীর বাজার সেতু, মাদারীপুরেসপ্তমবাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু, শেখ রাসেল সেতু, সুনামগঞ্জে সুরমা সেতু, বিরুলিয়া ও আশুলিয়া সড়কে বিরুলিয়া সেতু, আড়িয়াল খা সেতু, পুরাতন ব্রক্ষ্মপুত্রসেতু,কলাতলীসেতুসহবেশকিছু সেতুর নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর যানযট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সূদরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয় ও বিভাগ। এই ধারাবাহিকতায় প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেডএক্সপ্রেসোয়ের কাজ শুরু হয়েছে। শাহজালাজ বিমানবন্দর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত বাস র্যা পিড ট্রানজিট (BRT) নির্মানের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ হয়েছে। শেষ হতে চলেছে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ ৮০ কিলোমিটার চারলেনের কাজ। ইতিমধ্যে ২ লক্ষ ২১ হাজার ২৩৮ সেট ডিজিটাল নম্বরপ্লেট বিভিন্ন গাড়িতে সংযোজন করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২লাখ ৪২৫টি ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরন করা হয়েছে। সড়ক। সেতু মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষন ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অনুন্নয়ন খাতের আওতায় সার্ফেসিং ব্যতিত ১২৫ কিলোমিটার সড়ক পুনর্বাসন,২৭১ কিলোমিটার কার্পেটিংসহ সীলকোট, ১হাজার ৪৭৪ কিলোমিটার ওভারলে, ২৫৩ কিলোমিটার ডিবিএসটি,২১টি সেতু নির্মান/পুনঃনির্মান,১০৭টি কালভার্ট নির্মান/পুনঃনির্মান কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৫ সালে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা এবং ঢাকা-সিলেট-শিলং-গৌহাটি-ঢাকা রুটে বাস সার্ভিস চালু হয়। মতিঝিল-আব্দুল্লাহপুর রুটে এসি বাসে ই-টিকেটিং সিস্টেম চালু হয়েছে। বিআরটিসির আওতায় ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে গাবতলী ও মোহাম্মদপুরে ০২টি নতুন বাস ডিপো চালু হয়েছে।
রেলপথের উন্নয়নে ১১টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা আধুনিকায়নসহ লাকসাম-চিনকি আস্তানা ৬১ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মান প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। সিগন্যালিংসহ টঙ্গী-ভৈরববাজার পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মান প্রকল্পের ভৌত কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। এছাড়া ১০০টি মিটার গেজ ও ১৭০টি ব্রড গেজ যাত্রীবাহী গাড়ী সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।
পায়রা বন্দরের মূল অবকাঠামো গরে তোলার জন্য ৬হাজার একর জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। সীমিত আকারে পায়রা বন্দরের কাজ শুরু করার জন্য ১১২৮ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পায়রা গভীর সমুদ্র বদরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ‘প্রয়োজনীয় অবকাঠামো/সুবিধাদি উন্নয়ন’ নামে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বহুল প্রতীক্ষিত চট্রগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালের ৪টি জেটিতে কন্টেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ শুরু হয়েছে। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ ও শরীয়তপুরের মধ্যে এবং চাঁদপুরের মতলব ও নারায়নগঞ্জের মধ্যে দুটি নতুন রুটে ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলঅধিদপ্তরের (LGED)বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ হাজার ১৩৫ কিলোমিটার ( উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম) সড়ক, ৪৩ হাজার ২৫০ মিটার ব্রীজ/কালভার্ট নির্মান করা হয়েছে। রাজধানীর যানজট সমস্যা নিরসনে LGED বর্তমানে ৭৭৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মগবাজার-মৌচাক সমন্বিত ফ্লাইওভার প্রকল্পের অধীন ৮.২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারলেন বিশিষ্ট একটি ফ্লাইওভার নির্মানের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগঃ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে গত দু বছরে ৬৬৮.১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ কর্মসূচির আওতায় ২৪৩৯ জন ছাত্রছাত্রী/গবেষককে অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে ২৪০০ মেগাওয়াটবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষনতাসম্পন্ন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন লক্ষ্যে রাশিয়ান ফেডারেশন নির্ধারিত ঠিকাদারের সাথে ৩টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ জেলা/উপজেলা পর্যায়ে ১৮,১৩০ টি সরকারি অফিসে কানেক্টিভিটি স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ,ভারত,নেপাল ও ভূটান আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক স্থাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে এবং বাংলাবান্ধা পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি এওয়ার্ড ২০১৪, WITSA থেকে GLOBAL ICT Excellence Award-2014, এবং ইন্ট্যারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (ITU) থেকে ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি প্রাইজ-২০১৪ এবং ICT’s Sustainable Development Award 2015 অর্জন করেছে।মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা জুন ২০১৫ পর্যন্ত প্রায় ১৩.০২ কোটি এবং ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৫.৪৭০ কোটিতে পৌছেছে। টেলিডেনসিটি প্রায় ৮৩.০৯ শতাংশ এবং ইন্টারনেট ডেনসিটি প্রায় ৩৪.৪০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ডিসেম্বর ২০১৫ থেকে সারাদেশে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফিকেশনসহ সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন র্যক্রম চালু করা হয়েছে। সরকারের অন্যতম বৃহৎ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশন জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ১৩৭৯.৩৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। ডাক অধিদপ্তর মোবাইল মানি অর্ডার সার্ভিস ও ক্যাশকার্ড চালু করেছে। এ পর্যন্ত ৩৫০০ ডাকঘরে পোস্ট ই-সেন্টার চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড ঢাকা শহরের ১ লক্ষ পুরাতন ডিজিটাল টেলিফোন সিস্টেম প্রতিস্থাপনসহ ১লক্ষ ৩৯ হাজার নতুন টেলিফোন সংযোগ নতুন টেলিফোন প্রদান করেছে। ৬৪ টি জেলায় ৯৮টি উপজেলার ১০০৬টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে প্রায় ৪৫০০ কিলমিটার অপ্টিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়েছে এবং ৩০০টি ইউনিয়ঙ্কে অপ্টিক্যাল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর দূরদর্শী ও সুচিন্তিত কর্ম পরিকল্পনার আলোকে টেলিটক ৩-জি প্রকল্পের আওতায় দেশের ৭টি বিভাগীয় এবং ৬৪টি জেলা শহরে ৩-জি প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ SEA-ME-WE-5 নামক সাবমেরিন ক্যাবল কনসোর্টিয়াম এর সাথে Construction & Maintenance Agreement স্বাক্ষর করেছে। সরকার বর্তমানে ব্যান্ডউইথের সর্বনিম্ন মূল্যনির্ধারন করেছে প্রতি এমবিপিএস ৬২৫ টাকা।
সমাজকল্যান ও সামাজিক নিরাপত্তা, ভূমিহীনে ভূমিদান এবং মহিলা ও শিশু উন্নয়নঃ
পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রমের আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ২৪,১৫,০০০ জন। দরিদ্র নারীদের ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য পল্লীমাতৃকেন্দ্র কার্যক্রমের আওতায় বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলায় ৩১৮টি কর্মসূচির আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ৮৩৪৯৬০। এসিডদ্বগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ১,৫০,০৫০। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আটটি উদ্যেগের একটি হচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে ঋণ কর্মসূচির আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ৬১,৮৭৪। নারী ও শিশু উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগের ফলে দুস্থ মহিলারা ভাতা পেয়ে আসছেন। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদুঃস্থ মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা ১০.১২ লক্ষ। বয়ষ্কভাতাভোগীর সংখ্যা ২৭.২২৫ লক্ষ। অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪ লক্ষ। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তি ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫০০০০।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীকে আরো যুগোপযোগী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল অনুমোদন করা হয়েছে। এই কৌশল পাঁচ বছর মেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারন করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তামূলক ভাতা কর্মসূচির স্বচ্ছলতা নিশ্চিতকল্পে ভাতাভোগীর নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ভাতার অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। উপবৃত্তি প্রকল্পের আওতায় জুন ২০১৫ পর্যন্ত প্রতি মাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৭৮ লক্ষ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। রিচিং আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন (ROSC) প্রকল্পের অধীনে দরিদ্র পরিবারের ৩.৯০ লক্ষ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগসহ ভাতা পাচ্ছে। দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার ৩৩ লক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতি স্কুল দিবসে উচ্চশক্তি ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন বিস্কুট বিতরন করা হচ্ছে। ৪৯,৫৫৯টি ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে প্রায় ২৮,৪৫৭ একর খাসজমির বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ২৫৪টি গুচ্ছগ্রামে ১০,৭০৩টি ভূমিহীন ও গৃহায়ন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বর ২০১৪ এ ডিওক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (DNA) আইন পাস হয়। ঢাকাসহ দেশের ৮টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের প্রয়োজনীয় সকল সেবা এক স্থান থেকে প্রদানের উদ্দেশ্যে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (OCC) স্থাপন করা হয়েছে। দুঃস্থ ও অসহায় এবং শারীরিকভাবে অক্ষম মহিলাদের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি তাদের আত্মনির্ভরশীল করার লক্ষ্যে নির্বাচিত এনজিও'র মাধ্যমে প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়। এই কর্মসূচির উপকার ভোগীর ১০০ শতাংশই মহিলা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ৭,৫০,০০০ জন নারীকে VGD সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়ঃ
দেশের জনগনকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আটটি উদ্ভাবনী উদ্যোগের অন্যতম ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’। এছাড়া দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লি উন্নয়নের অংশ হিসেবে ‘চরজীবিকায়ন কর্মসূচি-২’ ‘সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি’, ‘পল্লি জনপদ (উন্নত আবাসন) সৃজন’, ‘ইকোনমিক এমপাওয়ারমেন্ট অফ দি পুওরেস্ট (EEP)’, ‘মিল্কভিটার কার্যক্রম সম্প্রসারন’, বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্যবিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমী’ প্রতিষ্ঠাকরন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষিভিত্তিক খামারের সংখ্যা ১৮.৭২ লক্ষ। ডিজিটাল বাংলাদেশের অবদানে সুবিধাভোগীরা অনলাইনের মাধ্যমে ২৫৭৩ কোটি টাকা লেনদেন করেছে। ইতোমধ্যে ৬৪ জেলার ৪৮৫টি উপজেলায় এ অনলাইন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে বিআরডিবির আওতায় এ পর্যন্ত ১,৯৯,৬৮৮টি সমিতি ও দল গঠন করা হয়েছে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেচ কার্যক্রমের আওতায় সদস্যদের মাঝে ১৮,৪৬০টি গভীর নলকূপ, ৪৪,৫২৩টি অগভীর নলকূপ, ১৯,৪০৫টি শক্তিচালিত পাম্প এবং ২,৭৩,০০০টি হস্তচালিত পাম্প বিতরন করা হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (BARD) ৮৮টি প্রশিক্ষন, অবহিতকরন এবং কর্মশালা সংগঠনের মাধ্যমে ৩,৬৫১ জন অংশগ্রহনকারীকে প্রশিক্ষন প্রদান করেছে। চর জীবিকায়ন কর্মসূচির আওতায় কুড়িগ্রাম,জামালপুর, গাইবান্ধা,বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলার ২৮টি উপজেলার ২.৫০লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে। 
প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস, জনপ্রশাসন ও কর্মসংস্থানঃ
‘ডাক ও টেলিটেলি যোগাযোগ মন্ত্রনালয়’ এবং ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়’ কে একীভূত করে ‘ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রনালয়’ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ‘যোগাযোগ মন্ত্রনালয়’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়’ এবং এর আওতাধীন সড়ক বিভাগের নাম পরিবর্তন করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ করা হয়েছে। ২০১৪ সালে ৯ জন বরেন্য ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে এবং ২০১৫ সালে ৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল মন্ত্রনালয়/বিভাগ এবং দপ্তর/সংস্থা সমূহে সিটিজেন চার্টার প্রণয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতানিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে Grievance Redress System (GRS) চালু করা হয়েছে। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ২০১২ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৫৯টি মন্ত্রনালয়/বিভাগ ওচিহ্নিত সংস্থায় নৈতিকতা কমিটি গঠন এবং কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা ও পরিবীক্ষণ কাঠামো করা হয়েছে।
বর্তমান মহাজোট সরকারের সময়ে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিদের জন্য সরকারি কর্মচারী আইন এবং পদায়ন/বদলি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া কর্মকৃতিভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে এবং সকল ক্যাডার কর্মকর্তার ডাটাবেইজপ্রস্তুত, পদোন্নতি নীতিমালা সংশোধন ও যুগোপযোগীকরন করা হয়েছে। সরকারি যানবাহন (ব্যবহার নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৪, বাংলাদেশ সিভিল (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪ এবং জনপ্রশাসন পদক প্রদান নীতিমালা ২০১৪ প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রনালয়,বিভাগ ও দপ্তরের ১,১০,৫৮৫ টি পদ সৃজন, ৫৭,৫৩২টি পদ সংরক্ষণ, ১১,৩৬৫টি পদ স্থায়ীকরন করা হয়েছে। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ৮,৩১২ জনকে নিয়োগ প্রদান, ২,১৫৮ জন নিয়োগের সুপারিশ এবং ৩৯৮৩জনের নিয়োগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। এ সময় ৬১৯ জন মৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবার এবং স্থায়ীভাবে অক্ষম ২ জন কর্মচারীকে মোট ৩০কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। NationalInitiative,Accordএবং ALLIANCE এর মাধ্যমে সকল গার্মেন্টস কারখানার Structural Integrity, Electrical & Fire Safety এর আওতায় নভেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত মোট ৩৬৬০টি কারখানা Assessmentকরাহয়েছে।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের বলিষ্ঠ উদ্যোগে অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসন রোধ করা সম্ভব হয়েছে। অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসন রোধকল্পে বিদ্যমান টাস্কফোর্স কে আরও বেগবান করার ফলে বিগত বছরে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশির অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।সিঙ্গাপুরের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশানসেক্টরে নিরাপদ ও দক্ষ কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো Sending Organization হিসেবে ১৪টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।জাপানেTechnical Intern প্রেরণের বিষয়ে International Manpower Development Organization, Japan এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মধ্যে MoUস্বাক্ষরিত হয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সাথে এ সম্পর্কিত আর ৪টি টেকনিক্যাল এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে।“বিভিন্ন জেলায় ৩০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন (২য় সংশোধিত)” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২৪টি জেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক দেশের ৬৪ জেলায় প্রায় ৯ হাজার ৫শ ১৩ জন বিদেশগামী কর্মীকে ‘অভিবাসন ঋণ’ প্রদান করেছে। তা ছাড়া বিদেশ ফেরত প্রায় ১৫০ জন কর্মীকে পুনর্বাসন ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
আইনঃ
আদালতে এখন ভয়েসরেকর্ডারের মাধ্যমে সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে উচ্চ ও নিম্ন আদালতের দৈনন্দিন কার্য তালিকা ও মামলার সর্বশেষ তথ্য, পরবর্তী ধার্য তারিখসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে। ২০১৪-১৫ সময়কালে ৪৮টি আইন,১৫২টি চুক্তি এবং ৬৫১টি সংবিধিবদ্ধপ্রজ্ঞাপণ প্রণয়নের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আইন ও বিধিমালার নির্ভরযোগ্য অনুবাদ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ ও সাহসী পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ৭টি মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়েছে এবং ১০টি মামলা আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।
পররাষ্ট্রঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী ফরেন পলিসি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ চিন্তাবিদদের একজন হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং জলাবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবিলা ও বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে সক্রিয় ও দৃশ্যমান ভূমিকা রাখায় তাঁকে ‘ডিসিশানমেকার্স’ ক্যাটাগরিতে শীর্ষ ১৩ জন চিন্তাবিদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাজনীতিতে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণWomen in Parliament(WIP) Global Forum Award 2015 পুরষ্কারেভূষিত হয়। ২০১৪ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেস্কোর ‘শান্তি বৃক্ষ’ (Tree of Peace)পুরস্কার লাভ করেন। জাতিসংঘেরMillennium Development Goals (MDGs) অর্জনে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ২০১৪ সালে Commonwealth Parliamentary Association (CPA) এর নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন, Inter-Parliamentary Union (IPU) এর প্রেসিডেন্ট, Comittee on the Elimination of Discrimination Against Woman (CEDAW) এর সদস্য, International Mobile Satellite Organizatio(IMSO) এর মহাপরিচালক পদে বাংলাদেশের প্রার্থীরা নির্ভাবিত হন। একই বছর বাংলাদেশ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, UNICEF Executive Board, International Labour Organization (ILO) এর গভর্নিং বডি এবং ITU Council এর সদস্য নির্বাচিত হয়। ২০১৫ এ UNESCO বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটকে UNESCO Category II স্ট্যাতাস প্রদান করে এবং জাতিসংঘ সাধার পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে। ২০১৪ সালে ঢাকায় BIMSTEC এর স্থায়ী সচিবালয় স্থাপিত হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে দুদেশের মধ্যে ২২টি উল্লেখযোগ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
পরিবেশ ও বনঃ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত কার্যক্রমের স্বীকৃতিস্বরুপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত Champions of The Earth পুরষ্কারে ভূষিত হন। সুন্দরবন এনভায়রনমেন্টাল এন্ড লাইভলিহুড সিকিউরিটি (SELS) প্রজেক্টের মাধ্যমে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর বিকল্প আয়বর্ধক কর্মসংস্থান সৃষ্টিকরার ফলে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছে। পরিবেশ দূষণকারী ৪০২টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৮ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা সহ দেশের উপকূলীয় জেলাসমূহে প্রায় ২ লক্ষ হেক্টর এলাকায় বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। ৫ লক্ষ পরিবারকে সামাজিক বনায়নের আওতায় আনা হয়েছে। ৭২ শতাংশ শিল্প কারখানায় ইটিপি স্থাপন সহ ৮ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন এবং ১৫ লক্ষ উন্নত চুলা বিতরণ করা হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই প্রথম জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।
তথ্যঃ
অধিকতর সেবা এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে কার্যক্রম সম্পাদনের উদ্দেশ্য নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের জন্য ১৬ তলা বিশিষ্ট তথ্য ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমান জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকারী ভবনসমূহ নির্মাণ কার্যক্রম তরান্বিত হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য বিটিভি সদর দপ্তর ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তথ্য কমিশন দুবছরে ৮৮৭৮ জন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ সাংবাদিক, সাব এডিটর, সাব ইন্সপেক্টর ও শিক্ষককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে এবং ৫৮৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫৫৭টি নিষ্পত্তি ক্রএছে। অবশিষ্ট ৩০টি অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য প্রক্রিয়াধীন্ন রয়েছে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (RAJUK) আবাসন সমস্যার সমাধানে উত্তরা আদর্শ আবাসিক শহর (৩য় পর্ব), পূর্বাচল নতুন শহর ও ঝিলমিল আবাসিক শহরে মধ্যবিত্তের জন্য প্রায় ৯০ হাজার এপার্টমেন্ট নির্মাণ করছে। এ ছাড়া জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সমস্যার নিরসন এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে বিক্রয়ের জন্য ৮৮৮১টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করছে। রাজধানীর কুড়াইল এলাকায় অংশীদারত্বের ভিত্তিতে প্রায় ৫০০০ ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে পূর্বাচলে দেশের সর্বোচ্চ ১৩০ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রঃ
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থল সীমানা সংক্রান্ত Land Boundary Agreement 1974 (মুজিব ইন্দিরা চুক্তি) অনুসমর্থন দলিল বিনময়ের মাধ্যমে কার্যকর হয়েছে। ১ আগষ্ট ২০১৫ কে Appointed day হিসেবে নির্ধারণপূর্বক উভয় দেশের মধ্যে ভূমি বিনিময় সম্পন্ন হয়। ফলে অপদখলীয় ভূমিসহ বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডে অবস্থিত সকল ভারতীয় ছিটমহল বাংলাদেশের এবং ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত সকল বাংলাদেশী ছিটমহল ভারতের ভূখন্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও কঠোর পরিশ্রমে দীর্ঘদিনের সমস্যা নিরসন হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর আধুনিকায়ন ও সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিদ্যমান ৫২৭টি বর্ডার অপারেশন পোষ্ট (বিওপি) এর অতিরিক্ত ৮০টি বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ বাংলাদেশি নাগরিকদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) এবং প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার মেশিন রিডেবল ভিসা (MRV) প্রদান করা হয়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনঃ

৪ হাজার ৩শ ২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে চট্টগ্রামস্থ হোটেল সৈকতের জমিতে ১০ তলা বিশিষ্ট নতুন পর্যটন মোটেল নির্মাণ সমাপ্তির পথে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনাল ১ ও ২, অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল, ভি ভি আইপি কমপ্লেক্স, কন্ট্রোল টাওয়ার ভবন ও পাওয়ার হাউজ ফায়ার ডিটেকশন ও এলার্ম সিস্টেম স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড এর লাভের পরিমাণ ২৩৩.০৬ কোটি টাকা (অনিরীক্ষিত)।

বস্ত্র ও পাটঃ

বস্ত্র ও পাট খাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে তা নিরসনের জন্য পাট আইন ২০১৫, বস্ত্রশিল্প প্রতিষ্ঠান আইন ২০১৫ ও বস্ত্রনীতি ২০১৫ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরিবেশ বান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০ এর আওতায় ধান,চাল,গম,ভুট্টা, সার ও চিনি মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূল্ক করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষাঃ



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তা চেতনায় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিএমএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, ভাটিয়ারী, চট্টগ্রাম শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ত হয়েছে। বিমান বাহিনী্ ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ শক্তিশালী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বিএএফএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ যশোর শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। Upgradation of Agro-Metrological Services শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে ৭টি কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। Improvement of Digital Mapping, System of Survey of Bangladesh (Revised) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, রংপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও মৌলভীবাজারে ৬টি Permanent GNSS/GPS Station, Digital Mapping Unit (DMU) স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সমগ্র দেশের Aerial Photography সম্পন্নকরণ সহ আন্তর্জাতিক সীমান্ত উপকূল ও সুন্দরবন এলাকার জন্য Sattelite Image ক্রয় করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কঃ

সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা ৮০০০ টাকায় এবং ভাতাভোগীদের সংখ্যা ২ লক্ষে উন্নীত করা হয়েছে এবং ৬৭৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে মাসিক ২০০০০ টাকা এবং বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক ১৫০০০ টাকা হারে সম্মানী ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণির যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারবর্গের মাসিক রাষ্ট্রীয় ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে পঙ্গুত্বের হার অনুযায়ী মাসিক সর্বনিম্ন ১৮০০০ টাকা এবং মাসিক সর্বোচ্চ ৪৮০০০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য নিয়মিত ভাতা প্রদান একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্পটিতে ২৯৭১টি বাসস্থান নির্মাণের সংস্থান রাখা হয়েছে। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪৩টি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সকল উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ৮১টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫৯টি স্মৃতিস্তভের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।

ধর্মঃ

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় দুই বছরে ১,৫০০০০টি শিশুকে প্রাক প্রাথমিক ও নৈতিকতা শিক্ষা, ১০,২৯০০০ জন কিশোর কিশোরীকে সহজ কুরআন ও নৈতিকতা শিক্ষা এবং ৩৮,৪০০ জন নিরক্ষর বয়স্ক ব্যক্তিকে অক্ষরজ্ঞানদানসহ নৈতিকতা শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার এবং দুঃস্থ পুনর্বাসনের লক্ষ্যে মোট ৪২,৯৮,৮৬০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে হজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে সকল হজযাত্রীর অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। প্রত্যেক হজযাত্রীকে এসএমএস এর মাধ্যমে হজ পূর্ব ৬টি নোটিফিকেশন প্রেরণ এবং মোবাইলের TVR সিস্টেমের মাধ্যমে হজ বুলেটিন ও তথ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
সংস্কৃতিঃ
জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ১৫ জন সুধীকে একুশে পদক ২০১৫ প্রদান করা হয়েছে। ২০১৪ এ বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সংস্কৃতি বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক এবং ২০১৫ এ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৫-১৭ মেয়াদে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেসরকারি পাঠাগার অনুদান খাতে ১ হাজার ২৫টি পাঠাগারে ২ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এছাড়া চারুশিল্প, থিয়েটার ইত্যাদি খাত থেকে ৪ কোটি ৮৬ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা দেশের ১,১৭৪টি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অনুদান প্রদান করা হয়।
পানি সম্পদঃ

গত ২ বছরে ১৯২.৪২ কিলোমিটার নদী খনন/ড্রেজিং সমাপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাপিটাল (পাইলট) ড্রেজিং অফ রিভার সিস্টেম ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় যমুনা নদীতে ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় পরীক্ষামূলক ড্রেজিং সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাপ্ত ড্রেজড ম্যাটেরিয়ালস দ্বারা সিরাজগঞ্জ শহর সংলগ্ন নদী তীরবর্তী অংশে চারটি ক্রসবার নির্মাণ করা হয়। এতে প্রায় ১৬ বর্গকিলোমিটার ভূমি স্থায়ীভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়। উপকূলীয় এলাকায় নতুন জেগে উঠা চরে সমাপ্তকৃত চর ডেভেলপমেন্ট ও সেটেলমেন্ট প্রকল্পসমূহের আওতায় ১৭,৫৩৩ ভূমিহীন পরিবারকে ১৪,৭৯২ হেক্টর জমি স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়াঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও খেলাধূলার প্রতি তাঁর বিশেষ অনুরাগের ফলে ক্রিকেট আজ বাংলাদেশকে বিশ্বে পরিচিত করে তুলেছে। ওয়ার্ল্ড টি টুয়েন্টি বাংলাদেশ ২০১৪ ও এশিয়া কাপ ক্রিকেট ২০১৪ এর সফল আয়োজন করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনুর্ধ্ব ১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা অর্জন করে এবং বিশ্ব হকি লীগের প্রথম পর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। দেশের দরিদ্রতম ১৭টি জেলার ১৭টি উপজেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং ১৪,৭১৮ জনকে প্রশিক্ষণ শেষে অস্থায়ী কর্মসংস্থানে নিযুক্ত করা হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশের দরিদ্রতম ২০টি উপজেলায় এ কর্মসূচী বাস্তবায়নে নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, দূরদর্শীতা ও রাষ্ট্রনায়কোচিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবার দ্বারপ্রান্তে। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক দুই মেয়াদে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশ হিসাবে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিচিতি পাবে- এলক্ষ্যে মহাজোট সরকারের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে।

গনতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক।

SUPPORT AWAMI LEAGUE, VOTE NOUKA ONCE AGAIN

গনতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক।


গনতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনটি এ দেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ও গনতন্ত্রের যাত্রাকে অব্যাহত রাখতে একটি গুরত্বপূর্ণ এবং অন্যান্য মাইলফলক। বাংলাদেশের জনগন দেশের স্বার্থে সবসময়ই অত্যন্ত সক্রিয়।চলমান উন্নয়ন পক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষায় প্রয়োজন জনগনের সক্রিয় অংশগ্রহন,সহযোগিতা এবং যথাযথ সমন্বিত উদ্যেগ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যেগের কারনে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলসমূহ অর্জনে সাফল্য দেখিয়েছে এবং জাতীয় আয় ও বাজেটে বরাদ্দ উল্লেখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি করতে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরন ঘটেছে নিম্ন আয় থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে। এ ছাড়াও কৃষি,শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্নখাতে ব্যাপক উন্নতি অর্জিত হয়েছে। অয়ান্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্বীকৃতি অর্জন করায় সারা বিশ্বের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সাফল্য আজ প্রমানিত। এই সাফল্য ও স্বীকৃতির সমন্বয়ে বর্তমান সরকার রুপকল্প (ভিশন) ২০২১ অর্জনে বদ্ধপরিকর। 

গত দুই বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে ও অগ্রগতির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে দেয়া হলঃ 
অর্থ, বানিজ্য ও পরিকল্পনাঃ
গত দু'বছরে গড় প্রবৃদ্ধির হারছিল ৬.৩ শতাংশ। এছাড়া মাথাপিছু আয় বেড়ে ১৩১৪ মার্কিন ডলার, রিজার্ভ প্রায় ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রেমিট্যান্স ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সিদ্ধান্তের ফলে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অবসরকালীন সুবিধাদি উল্লেখ্যযোগ্য পরিমানে বৃদ্ধি করে ইতিমধ্যে জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের তুলনায় বাজেটের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশ এবং বার্ষিক উন্নয়ন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৫ শতাংশ। Financial reporting act ২০১৫ অনুমোদন করাও সরকারের বিরাট সফলতা।
বর্তমানে ১৯৬টি দেশে ৭২৯টি পণ্য রপ্তানি করে আয় হচ্ছে ৩১।২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ WTO তে LDC কোঅর্ডিনেটরের ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত ১১টি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে সেবাখাতে প্রেফারেনশিয়াল সুবিধা দিচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে গত দুবছরে ৩৮ হাজার ৮শ ৮৩ মেট্রিক টন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ন্যায্যমূল্যে বিক্রয় করা হয়। খাদ্যদ্রব্যের গুনাগুন বজায় রাখার লক্ষ্যে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।
গত দুবছরে ৬২টি একনেক বৈঠকে ৪২৯৮০৪.৪৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি দারিদ্র্য নিরসনের সাথে প্রত্যেক নাগরিকের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন (২০১৬-২০২০) করা হয়েছে।

শিক্ষাঃ
দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উপবৃত্তি ও বেতন মোকুফ সহায়তা হিসেবে ৪৯লক্ষ ২৩ হাজার ৪৮৫ শিক্ষার্থীকে ৮৮০.২৭ কোটি টাকা বিতরন করা হয়। জাতিসংঘের বেধে দেয়া সময়সীমার তিন বছর আগেই ২০১২ সালে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাগত সমতা অর্জন করে। এটি সম্ভব হয়েছে মহাজোট সরকারের কঠোর পরিশ্রম ও আন্তরিকতার ফলে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনের অংশ হিসেবে ১০০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৩.১১ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। ঢাকায় একটি অটিস্টিক একাডেমী স্থাপনের জন্য পৃথকভাবে দুটি হোস্টেল নির্মান করা হবে যেখানে প্রতিটিতে ১০০ জন অটিস্টিক শিশুর আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। অটিজম বিষয়ক বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারপার্সন্ম সায়মা ওয়াজেদ এর আন্তরিক ও কঠোর পরিশ্রমে দেশের ওটিস্টিক ছেলে-মেয়েদের কল্যানে কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।
২০১৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নীট ভর্তির হার ৯৭.৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ঝরে পড়ার হার হ্রাস পেয়ে ২০.০৯ শতাংশে দাড়িয়েছে। ২০১৫ শিক্ষাবর্ষে প্রায় ২.২৩ কোটি শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১ কোটি ৫৯ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৭টি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের দপ্তরসমূহে ইন্টারনেট সংযোগসহ ৫৫টি পিটিআইতে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। ৫ হাজার ৪৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ, মাল্টিমিড়িয়া,ইন্টারনেট মডেম ও সাউন্ড সিস্টেম সরবারহ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনঃ
বিভিন্ন সূচকে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রতিফলিত হচ্ছে। মানুষের গড় আয়ু ৭০।৭ বছরে উন্নীত হয়েছে। অনুর্দ্ধ ৫ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর হার কমে প্রতি হাজারে ৪১ জনে দাড়িয়েছে। মাতৃমৃত্যু হারও কমে প্রতি লক্ষে ১৭০ জনে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পোলিওমুক্ত দেশ হিসেবে সনদ লাভ করে। ৫টি আর্মি মেডিকেল কলেজসহ ১২টি সরকারি মেডিকেলে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রায় ৪০টি হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকায় জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউট নির্মানের লক্ষ্যে প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। প্রায় ৬৩০০ চিকিৎসককে নিয়োগ দিয়ে উপজেলা পর্যায়ে পদায়ন করা হয়েছে। মবাইল ফোনে ১৬২৬৩ নম্বরে ২৪ ঘন্টা স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রস্তাবিত অটিজম ও স্নায়ু বিকাশজনিত প্রস্তাবনা পাস হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর গত দুই বছরে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৩১৮টি উৎপাদন নল্কূপ,৩৪টি পানি শোধানাগার, ১৯টি উচ্চ জলাধার,৭৪৩ কিলোমিটার বিভিন্ন ব্যাসের পাইপ লাইন, ৮৪০৩টি স্যানিটারি ল্যাট্রিন, ১৯০টি কমিউনিটি ল্যাট্রিন-পাবলিক টয়লেট স্থাপন করেছে।
কৃষি, খাদ্য ও শিল্পঃ
২০১৪-১৫ সালে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছে ৩৮৪।১৮ লক্ষ মেট্রিক টন। উৎপাদনের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রায় ৭ হাজার ১০১ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। খামার যান্ত্রিকীকরনে ৩০শতাংশ ভর্তূকিতে যন্ত্রাংশ সরবারহের জন্য ১৭২।১৯ কটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন্সহ হাওড় অঞ্চলে কৃষিযন্ত্র সরবারহের জন্য ১০।৬০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। গত দুই বছরে খরা,বন্যা, লবনাক্ততা সহনশীলসহ রোগ প্রতিরোধক্ষম এবং উচ্চ ফলনশীল ৬৪টি জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। কৃষকদের জৈবসার ও প্রাকৃতিক বালাইনাশক ব্যবহারে উৎসাহিত করার ফলে নিরাপদ ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।
২০১৫ সালে দানাশস্যের উৎপাদন ৩৫।৬৮ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য মজুদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে অভ্যন্তরীন উৎস হতে ১২ লক্ষ টন চাল এবং ২ লক্ষ ৪হাজার মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০১৫ সালে মত খাদ্যশস্য মজুদ ছিল ১৫লক্ষ ৪৬ হাজার ৯৩৯মেট্রিক টন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মহাজোট সরকারের সময়ই শ্রীলংকায় ২৫হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানি হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ এই প্রথম অন্য দেশে চাল রপ্তানি করেছে। সরকারি খাদ্য বিতরন কর্মসুচির আওতায় ১১লক্ষ ২৭হাজার মেট্রিক টন চাল এবং ৪লক্ষ ৪৭হাজার মেট্রিক টন গম বিতরন করা হয়েছে। সরকারি খাদ্য গুদামের ধারনক্ষমতা ১৯লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। সান্তাহার সাইল ক্যাম্পাসে ২৫০০০মেট্রিক টন ধারনক্ষমতাসম্পন্ন বহুতল গুদাম নির্মান সম্পন্ন হয়েছে।
বর্তমানে মৎস্য উৎপাদনে গড়প্রবৃদ্ধির হার ৬.২৩ শতাংশ। প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ লোক মৎস্যখাত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে। রুপকল্প ২০২১ অর্জনে লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩৫.৪৮ লক্ষ মেট্রিক টন মৎস্য ও চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। দুই বছরে প্রায় ১৬৫ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত মাছ উৎপাদিত হয়েছে এবং ১.৬১ লক্ষ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে ৯.৫ হাজার কোটি টাকার বৈদশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ blue growth economyতে বাংলাদেশকে pilot country হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দুধের উৎপাদন ৬৯.৭০ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে মাংস ও ডিমের উৎপাদন যথাক্রমে ৫৮.৬ লক্ষ মেট্রিক টন ১ হাজার ৯৯ কোটি ৫২ লক্ষে উন্নীত হয়েছে।
ইউরিয়া সারের চাহিদা পূরনকল্পে বার্ষিক ৫ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন শাহজালাল সারকারখানা নির্মান প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। বিসিক ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশব্যাপী ক্ষুদ্র শিল্পে ৩৮৯০ ও কুটিরশিল্প খাতে ৮৯৩৪ জন সম্ভাবনাময় শিল্পোদ্যোক্তা চিহ্নিত করে তাদেরকে শিল্পস্থাপনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকার পরামর্শ – সেবা- সহায়তা প্রদান করে আসছে । বিএসটিআই এর ফুড, মাইক্রবায়োলজী, সিমেন্ট ও টেক্সটাইল ল্যাবরেটরি ভারতের National Accreditiation Board for Testing Laboratories (NABL) থেকে এক্রিডিটেশন লাভ করেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানীঃ
বিদ্যুৎ খাতে বর্তমান মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈর্ষনীয় সাফল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত দুই বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (গ্রীড কানেকটেড) ১০২৮৯ মেগাওয়াট থেকে ১১৯৫২ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৬৬৭৫ মেগাওয়াট। ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়ায় ৮১৭৭ মেগাওয়াট। ২০১৩ সালের মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩২১ কিলোওয়াট আওয়ার হতে বর্তমানেও ৩৭১ কিলোওয়াট আওয়ারে উন্নীত হয়েছে। দৈনিক গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২৭০০+ মিলিয়ন ঘনফুট হয়েছে এবং সাথে সাথে বিকল্প উৎস হিসেবে আমদানিকৃত তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) চিহ্নিত করা হয়েছে। Floating Storage Re-gasification Unit (FSRU) স্থাপনের জন্য Excelerate Energy (EE) Singapore এর কারিগরি সহায়তায় দৈনিক ৫০০ এমেমসিএফডি (MMCFD) ক্ষমতাসম্পন্ন LNG TERMINAL স্থাপনের কাজ শেষ হলে ২০১৭ এ জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ যুক্ত করা সম্ভব হবে।
সড়ক-সেতু, রেল, নৌ ও স্থানীয় যোগাযোগ অবকাঠামোঃ
পদ্মা সেতুর মূল সেতু নির্মান এবং নদী শাসনের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি সার্ভিস এরিয়া, কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড নির্মান সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের কাজ প্রায় ২৮ ভাগ শেষ হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল নির্মানের প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চট্রগ্রামের কর্নফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল নির্মানে চীন সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ঢাকা- চটড়্গ্রামমহাসড়কের ১৯২ কিলমিটার এর মধ্যে ১৮৪ কিলোমিটার চারলেনেউন্নীতিকরন কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। পার্বত্য চট্রগ্রামে ২২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬টি মহাসড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে। ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ থানচি- আলিকদম মহাসড়কটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। সিলেটে সুরমা নদীর উপর কাজীর বাজার সেতু, মাদারীপুরেসপ্তমবাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু, শেখ রাসেল সেতু, সুনামগঞ্জে সুরমা সেতু, বিরুলিয়া ও আশুলিয়া সড়কে বিরুলিয়া সেতু, আড়িয়াল খা সেতু, পুরাতন ব্রক্ষ্মপুত্রসেতু,কলাতলীসেতুসহবেশকিছু সেতুর নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর যানযট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সূদরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয় ও বিভাগ। এই ধারাবাহিকতায় প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেডএক্সপ্রেসোয়ের কাজ শুরু হয়েছে। শাহজালাজ বিমানবন্দর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত বাস র্যা পিড ট্রানজিট (BRT) নির্মানের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ হয়েছে। শেষ হতে চলেছে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ ৮০ কিলোমিটার চারলেনের কাজ। ইতিমধ্যে ২ লক্ষ ২১ হাজার ২৩৮ সেট ডিজিটাল নম্বরপ্লেট বিভিন্ন গাড়িতে সংযোজন করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২লাখ ৪২৫টি ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরন করা হয়েছে। সড়ক। সেতু মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষন ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অনুন্নয়ন খাতের আওতায় সার্ফেসিং ব্যতিত ১২৫ কিলোমিটার সড়ক পুনর্বাসন,২৭১ কিলোমিটার কার্পেটিংসহ সীলকোট, ১হাজার ৪৭৪ কিলোমিটার ওভারলে, ২৫৩ কিলোমিটার ডিবিএসটি,২১টি সেতু নির্মান/পুনঃনির্মান,১০৭টি কালভার্ট নির্মান/পুনঃনির্মান কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৫ সালে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা এবং ঢাকা-সিলেট-শিলং-গৌহাটি-ঢাকা রুটে বাস সার্ভিস চালু হয়। মতিঝিল-আব্দুল্লাহপুর রুটে এসি বাসে ই-টিকেটিং সিস্টেম চালু হয়েছে। বিআরটিসির আওতায় ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে গাবতলী ও মোহাম্মদপুরে ০২টি নতুন বাস ডিপো চালু হয়েছে।
রেলপথের উন্নয়নে ১১টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা আধুনিকায়নসহ লাকসাম-চিনকি আস্তানা ৬১ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মান প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। সিগন্যালিংসহ টঙ্গী-ভৈরববাজার পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মান প্রকল্পের ভৌত কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। এছাড়া ১০০টি মিটার গেজ ও ১৭০টি ব্রড গেজ যাত্রীবাহী গাড়ী সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।
পায়রা বন্দরের মূল অবকাঠামো গরে তোলার জন্য ৬হাজার একর জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। সীমিত আকারে পায়রা বন্দরের কাজ শুরু করার জন্য ১১২৮ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পায়রা গভীর সমুদ্র বদরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ‘প্রয়োজনীয় অবকাঠামো/সুবিধাদি উন্নয়ন’ নামে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বহুল প্রতীক্ষিত চট্রগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালের ৪টি জেটিতে কন্টেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ শুরু হয়েছে। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ ও শরীয়তপুরের মধ্যে এবং চাঁদপুরের মতলব ও নারায়নগঞ্জের মধ্যে দুটি নতুন রুটে ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলঅধিদপ্তরের (LGED)বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ হাজার ১৩৫ কিলোমিটার ( উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম) সড়ক, ৪৩ হাজার ২৫০ মিটার ব্রীজ/কালভার্ট নির্মান করা হয়েছে। রাজধানীর যানজট সমস্যা নিরসনে LGED বর্তমানে ৭৭৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মগবাজার-মৌচাক সমন্বিত ফ্লাইওভার প্রকল্পের অধীন ৮.২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারলেন বিশিষ্ট একটি ফ্লাইওভার নির্মানের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগঃ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে গত দু বছরে ৬৬৮.১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ কর্মসূচির আওতায় ২৪৩৯ জন ছাত্রছাত্রী/গবেষককে অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে ২৪০০ মেগাওয়াটবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষনতাসম্পন্ন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন লক্ষ্যে রাশিয়ান ফেডারেশন নির্ধারিত ঠিকাদারের সাথে ৩টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ জেলা/উপজেলা পর্যায়ে ১৮,১৩০ টি সরকারি অফিসে কানেক্টিভিটি স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ,ভারত,নেপাল ও ভূটান আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক স্থাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে এবং বাংলাবান্ধা পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি এওয়ার্ড ২০১৪, WITSA থেকে GLOBAL ICT Excellence Award-2014, এবং ইন্ট্যারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (ITU) থেকে ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি প্রাইজ-২০১৪ এবং ICT’s Sustainable Development Award 2015 অর্জন করেছে।মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা জুন ২০১৫ পর্যন্ত প্রায় ১৩.০২ কোটি এবং ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৫.৪৭০ কোটিতে পৌছেছে। টেলিডেনসিটি প্রায় ৮৩.০৯ শতাংশ এবং ইন্টারনেট ডেনসিটি প্রায় ৩৪.৪০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ডিসেম্বর ২০১৫ থেকে সারাদেশে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফিকেশনসহ সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন র্যক্রম চালু করা হয়েছে। সরকারের অন্যতম বৃহৎ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশন জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ১৩৭৯.৩৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। ডাক অধিদপ্তর মোবাইল মানি অর্ডার সার্ভিস ও ক্যাশকার্ড চালু করেছে। এ পর্যন্ত ৩৫০০ ডাকঘরে পোস্ট ই-সেন্টার চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড ঢাকা শহরের ১ লক্ষ পুরাতন ডিজিটাল টেলিফোন সিস্টেম প্রতিস্থাপনসহ ১লক্ষ ৩৯ হাজার নতুন টেলিফোন সংযোগ নতুন টেলিফোন প্রদান করেছে। ৬৪ টি জেলায় ৯৮টি উপজেলার ১০০৬টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে প্রায় ৪৫০০ কিলমিটার অপ্টিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়েছে এবং ৩০০টি ইউনিয়ঙ্কে অপ্টিক্যাল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর দূরদর্শী ও সুচিন্তিত কর্ম পরিকল্পনার আলোকে টেলিটক ৩-জি প্রকল্পের আওতায় দেশের ৭টি বিভাগীয় এবং ৬৪টি জেলা শহরে ৩-জি প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ SEA-ME-WE-5 নামক সাবমেরিন ক্যাবল কনসোর্টিয়াম এর সাথে Construction & Maintenance Agreement স্বাক্ষর করেছে। সরকার বর্তমানে ব্যান্ডউইথের সর্বনিম্ন মূল্যনির্ধারন করেছে প্রতি এমবিপিএস ৬২৫ টাকা।
সমাজকল্যান ও সামাজিক নিরাপত্তা, ভূমিহীনে ভূমিদান এবং মহিলা ও শিশু উন্নয়নঃ
পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রমের আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ২৪,১৫,০০০ জন। দরিদ্র নারীদের ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য পল্লীমাতৃকেন্দ্র কার্যক্রমের আওতায় বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলায় ৩১৮টি কর্মসূচির আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ৮৩৪৯৬০। এসিডদ্বগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ১,৫০,০৫০। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আটটি উদ্যেগের একটি হচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে ঋণ কর্মসূচির আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ৬১,৮৭৪। নারী ও শিশু উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগের ফলে দুস্থ মহিলারা ভাতা পেয়ে আসছেন। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদুঃস্থ মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা ১০.১২ লক্ষ। বয়ষ্কভাতাভোগীর সংখ্যা ২৭.২২৫ লক্ষ। অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪ লক্ষ। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তি ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫০০০০।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীকে আরো যুগোপযোগী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল অনুমোদন করা হয়েছে। এই কৌশল পাঁচ বছর মেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারন করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তামূলক ভাতা কর্মসূচির স্বচ্ছলতা নিশ্চিতকল্পে ভাতাভোগীর নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ভাতার অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। উপবৃত্তি প্রকল্পের আওতায় জুন ২০১৫ পর্যন্ত প্রতি মাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৭৮ লক্ষ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। রিচিং আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন (ROSC) প্রকল্পের অধীনে দরিদ্র পরিবারের ৩.৯০ লক্ষ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগসহ ভাতা পাচ্ছে। দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার ৩৩ লক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতি স্কুল দিবসে উচ্চশক্তি ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন বিস্কুট বিতরন করা হচ্ছে। ৪৯,৫৫৯টি ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে প্রায় ২৮,৪৫৭ একর খাসজমির বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ২৫৪টি গুচ্ছগ্রামে ১০,৭০৩টি ভূমিহীন ও গৃহায়ন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বর ২০১৪ এ ডিওক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (DNA) আইন পাস হয়। ঢাকাসহ দেশের ৮টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের প্রয়োজনীয় সকল সেবা এক স্থান থেকে প্রদানের উদ্দেশ্যে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (OCC) স্থাপন করা হয়েছে। দুঃস্থ ও অসহায় এবং শারীরিকভাবে অক্ষম মহিলাদের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি তাদের আত্মনির্ভরশীল করার লক্ষ্যে নির্বাচিত এনজিও'র মাধ্যমে প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়। এই কর্মসূচির উপকার ভোগীর ১০০ শতাংশই মহিলা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ৭,৫০,০০০ জন নারীকে VGD সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়ঃ
দেশের জনগনকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আটটি উদ্ভাবনী উদ্যোগের অন্যতম ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’। এছাড়া দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লি উন্নয়নের অংশ হিসেবে ‘চরজীবিকায়ন কর্মসূচি-২’ ‘সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি’, ‘পল্লি জনপদ (উন্নত আবাসন) সৃজন’, ‘ইকোনমিক এমপাওয়ারমেন্ট অফ দি পুওরেস্ট (EEP)’, ‘মিল্কভিটার কার্যক্রম সম্প্রসারন’, বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্যবিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমী’ প্রতিষ্ঠাকরন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষিভিত্তিক খামারের সংখ্যা ১৮.৭২ লক্ষ। ডিজিটাল বাংলাদেশের অবদানে সুবিধাভোগীরা অনলাইনের মাধ্যমে ২৫৭৩ কোটি টাকা লেনদেন করেছে। ইতোমধ্যে ৬৪ জেলার ৪৮৫টি উপজেলায় এ অনলাইন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে বিআরডিবির আওতায় এ পর্যন্ত ১,৯৯,৬৮৮টি সমিতি ও দল গঠন করা হয়েছে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেচ কার্যক্রমের আওতায় সদস্যদের মাঝে ১৮,৪৬০টি গভীর নলকূপ, ৪৪,৫২৩টি অগভীর নলকূপ, ১৯,৪০৫টি শক্তিচালিত পাম্প এবং ২,৭৩,০০০টি হস্তচালিত পাম্প বিতরন করা হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (BARD) ৮৮টি প্রশিক্ষন, অবহিতকরন এবং কর্মশালা সংগঠনের মাধ্যমে ৩,৬৫১ জন অংশগ্রহনকারীকে প্রশিক্ষন প্রদান করেছে। চর জীবিকায়ন কর্মসূচির আওতায় কুড়িগ্রাম,জামালপুর, গাইবান্ধা,বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলার ২৮টি উপজেলার ২.৫০লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে। 
প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস, জনপ্রশাসন ও কর্মসংস্থানঃ
‘ডাক ও টেলিটেলি যোগাযোগ মন্ত্রনালয়’ এবং ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়’ কে একীভূত করে ‘ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রনালয়’ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ‘যোগাযোগ মন্ত্রনালয়’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়’ এবং এর আওতাধীন সড়ক বিভাগের নাম পরিবর্তন করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ করা হয়েছে। ২০১৪ সালে ৯ জন বরেন্য ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে এবং ২০১৫ সালে ৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল মন্ত্রনালয়/বিভাগ এবং দপ্তর/সংস্থা সমূহে সিটিজেন চার্টার প্রণয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতানিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে Grievance Redress System (GRS) চালু করা হয়েছে। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ২০১২ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৫৯টি মন্ত্রনালয়/বিভাগ ওচিহ্নিত সংস্থায় নৈতিকতা কমিটি গঠন এবং কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা ও পরিবীক্ষণ কাঠামো করা হয়েছে।
বর্তমান মহাজোট সরকারের সময়ে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিদের জন্য সরকারি কর্মচারী আইন এবং পদায়ন/বদলি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া কর্মকৃতিভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে এবং সকল ক্যাডার কর্মকর্তার ডাটাবেইজপ্রস্তুত, পদোন্নতি নীতিমালা সংশোধন ও যুগোপযোগীকরন করা হয়েছে। সরকারি যানবাহন (ব্যবহার নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৪, বাংলাদেশ সিভিল (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪ এবং জনপ্রশাসন পদক প্রদান নীতিমালা ২০১৪ প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রনালয়,বিভাগ ও দপ্তরের ১,১০,৫৮৫ টি পদ সৃজন, ৫৭,৫৩২টি পদ সংরক্ষণ, ১১,৩৬৫টি পদ স্থায়ীকরন করা হয়েছে। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ৮,৩১২ জনকে নিয়োগ প্রদান, ২,১৫৮ জন নিয়োগের সুপারিশ এবং ৩৯৮৩জনের নিয়োগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। এ সময় ৬১৯ জন মৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবার এবং স্থায়ীভাবে অক্ষম ২ জন কর্মচারীকে মোট ৩০কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। NationalInitiative,Accordএবং ALLIANCE এর মাধ্যমে সকল গার্মেন্টস কারখানার Structural Integrity, Electrical & Fire Safety এর আওতায় নভেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত মোট ৩৬৬০টি কারখানা Assessmentকরাহয়েছে।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের বলিষ্ঠ উদ্যোগে অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসন রোধ করা সম্ভব হয়েছে। অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসন রোধকল্পে বিদ্যমান টাস্কফোর্স কে আরও বেগবান করার ফলে বিগত বছরে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশির অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।সিঙ্গাপুরের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশানসেক্টরে নিরাপদ ও দক্ষ কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো Sending Organization হিসেবে ১৪টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।জাপানেTechnical Intern প্রেরণের বিষয়ে International Manpower Development Organization, Japan এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মধ্যে MoUস্বাক্ষরিত হয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সাথে এ সম্পর্কিত আর ৪টি টেকনিক্যাল এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে।“বিভিন্ন জেলায় ৩০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন (২য় সংশোধিত)” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২৪টি জেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক দেশের ৬৪ জেলায় প্রায় ৯ হাজার ৫শ ১৩ জন বিদেশগামী কর্মীকে ‘অভিবাসন ঋণ’ প্রদান করেছে। তা ছাড়া বিদেশ ফেরত প্রায় ১৫০ জন কর্মীকে পুনর্বাসন ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
আইনঃ
আদালতে এখন ভয়েসরেকর্ডারের মাধ্যমে সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে উচ্চ ও নিম্ন আদালতের দৈনন্দিন কার্য তালিকা ও মামলার সর্বশেষ তথ্য, পরবর্তী ধার্য তারিখসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে। ২০১৪-১৫ সময়কালে ৪৮টি আইন,১৫২টি চুক্তি এবং ৬৫১টি সংবিধিবদ্ধপ্রজ্ঞাপণ প্রণয়নের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আইন ও বিধিমালার নির্ভরযোগ্য অনুবাদ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ ও সাহসী পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ৭টি মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়েছে এবং ১০টি মামলা আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।
পররাষ্ট্রঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী ফরেন পলিসি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ চিন্তাবিদদের একজন হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং জলাবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবিলা ও বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে সক্রিয় ও দৃশ্যমান ভূমিকা রাখায় তাঁকে ‘ডিসিশানমেকার্স’ ক্যাটাগরিতে শীর্ষ ১৩ জন চিন্তাবিদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাজনীতিতে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণWomen in Parliament(WIP) Global Forum Award 2015 পুরষ্কারেভূষিত হয়। ২০১৪ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেস্কোর ‘শান্তি বৃক্ষ’ (Tree of Peace)পুরস্কার লাভ করেন। জাতিসংঘেরMillennium Development Goals (MDGs) অর্জনে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ২০১৪ সালে Commonwealth Parliamentary Association (CPA) এর নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন, Inter-Parliamentary Union (IPU) এর প্রেসিডেন্ট, Comittee on the Elimination of Discrimination Against Woman (CEDAW) এর সদস্য, International Mobile Satellite Organizatio(IMSO) এর মহাপরিচালক পদে বাংলাদেশের প্রার্থীরা নির্ভাবিত হন। একই বছর বাংলাদেশ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, UNICEF Executive Board, International Labour Organization (ILO) এর গভর্নিং বডি এবং ITU Council এর সদস্য নির্বাচিত হয়। ২০১৫ এ UNESCO বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটকে UNESCO Category II স্ট্যাতাস প্রদান করে এবং জাতিসংঘ সাধার পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে। ২০১৪ সালে ঢাকায় BIMSTEC এর স্থায়ী সচিবালয় স্থাপিত হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে দুদেশের মধ্যে ২২টি উল্লেখযোগ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
পরিবেশ ও বনঃ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত কার্যক্রমের স্বীকৃতিস্বরুপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত Champions of The Earth পুরষ্কারে ভূষিত হন। সুন্দরবন এনভায়রনমেন্টাল এন্ড লাইভলিহুড সিকিউরিটি (SELS) প্রজেক্টের মাধ্যমে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর বিকল্প আয়বর্ধক কর্মসংস্থান সৃষ্টিকরার ফলে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছে। পরিবেশ দূষণকারী ৪০২টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৮ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা সহ দেশের উপকূলীয় জেলাসমূহে প্রায় ২ লক্ষ হেক্টর এলাকায় বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। ৫ লক্ষ পরিবারকে সামাজিক বনায়নের আওতায় আনা হয়েছে। ৭২ শতাংশ শিল্প কারখানায় ইটিপি স্থাপন সহ ৮ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন এবং ১৫ লক্ষ উন্নত চুলা বিতরণ করা হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই প্রথম জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।
তথ্যঃ
অধিকতর সেবা এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে কার্যক্রম সম্পাদনের উদ্দেশ্য নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের জন্য ১৬ তলা বিশিষ্ট তথ্য ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমান জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকারী ভবনসমূহ নির্মাণ কার্যক্রম তরান্বিত হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য বিটিভি সদর দপ্তর ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তথ্য কমিশন দুবছরে ৮৮৭৮ জন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ সাংবাদিক, সাব এডিটর, সাব ইন্সপেক্টর ও শিক্ষককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে এবং ৫৮৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫৫৭টি নিষ্পত্তি ক্রএছে। অবশিষ্ট ৩০টি অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য প্রক্রিয়াধীন্ন রয়েছে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (RAJUK) আবাসন সমস্যার সমাধানে উত্তরা আদর্শ আবাসিক শহর (৩য় পর্ব), পূর্বাচল নতুন শহর ও ঝিলমিল আবাসিক শহরে মধ্যবিত্তের জন্য প্রায় ৯০ হাজার এপার্টমেন্ট নির্মাণ করছে। এ ছাড়া জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সমস্যার নিরসন এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে বিক্রয়ের জন্য ৮৮৮১টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করছে। রাজধানীর কুড়াইল এলাকায় অংশীদারত্বের ভিত্তিতে প্রায় ৫০০০ ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে পূর্বাচলে দেশের সর্বোচ্চ ১৩০ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রঃ
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থল সীমানা সংক্রান্ত Land Boundary Agreement 1974 (মুজিব ইন্দিরা চুক্তি) অনুসমর্থন দলিল বিনময়ের মাধ্যমে কার্যকর হয়েছে। ১ আগষ্ট ২০১৫ কে Appointed day হিসেবে নির্ধারণপূর্বক উভয় দেশের মধ্যে ভূমি বিনিময় সম্পন্ন হয়। ফলে অপদখলীয় ভূমিসহ বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডে অবস্থিত সকল ভারতীয় ছিটমহল বাংলাদেশের এবং ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত সকল বাংলাদেশী ছিটমহল ভারতের ভূখন্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও কঠোর পরিশ্রমে দীর্ঘদিনের সমস্যা নিরসন হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর আধুনিকায়ন ও সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিদ্যমান ৫২৭টি বর্ডার অপারেশন পোষ্ট (বিওপি) এর অতিরিক্ত ৮০টি বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ বাংলাদেশি নাগরিকদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) এবং প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার মেশিন রিডেবল ভিসা (MRV) প্রদান করা হয়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনঃ

৪ হাজার ৩শ ২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে চট্টগ্রামস্থ হোটেল সৈকতের জমিতে ১০ তলা বিশিষ্ট নতুন পর্যটন মোটেল নির্মাণ সমাপ্তির পথে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনাল ১ ও ২, অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল, ভি ভি আইপি কমপ্লেক্স, কন্ট্রোল টাওয়ার ভবন ও পাওয়ার হাউজ ফায়ার ডিটেকশন ও এলার্ম সিস্টেম স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড এর লাভের পরিমাণ ২৩৩.০৬ কোটি টাকা (অনিরীক্ষিত)।

বস্ত্র ও পাটঃ

বস্ত্র ও পাট খাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে তা নিরসনের জন্য পাট আইন ২০১৫, বস্ত্রশিল্প প্রতিষ্ঠান আইন ২০১৫ ও বস্ত্রনীতি ২০১৫ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরিবেশ বান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০ এর আওতায় ধান,চাল,গম,ভুট্টা, সার ও চিনি মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূল্ক করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষাঃ



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তা চেতনায় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিএমএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, ভাটিয়ারী, চট্টগ্রাম শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ত হয়েছে। বিমান বাহিনী্ ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ শক্তিশালী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বিএএফএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ যশোর শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। Upgradation of Agro-Metrological Services শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে ৭টি কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। Improvement of Digital Mapping, System of Survey of Bangladesh (Revised) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, রংপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও মৌলভীবাজারে ৬টি Permanent GNSS/GPS Station, Digital Mapping Unit (DMU) স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সমগ্র দেশের Aerial Photography সম্পন্নকরণ সহ আন্তর্জাতিক সীমান্ত উপকূল ও সুন্দরবন এলাকার জন্য Sattelite Image ক্রয় করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কঃ

সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা ৮০০০ টাকায় এবং ভাতাভোগীদের সংখ্যা ২ লক্ষে উন্নীত করা হয়েছে এবং ৬৭৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে মাসিক ২০০০০ টাকা এবং বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক ১৫০০০ টাকা হারে সম্মানী ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণির যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারবর্গের মাসিক রাষ্ট্রীয় ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে পঙ্গুত্বের হার অনুযায়ী মাসিক সর্বনিম্ন ১৮০০০ টাকা এবং মাসিক সর্বোচ্চ ৪৮০০০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য নিয়মিত ভাতা প্রদান একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্পটিতে ২৯৭১টি বাসস্থান নির্মাণের সংস্থান রাখা হয়েছে। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪৩টি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সকল উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ৮১টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫৯টি স্মৃতিস্তভের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।

ধর্মঃ

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় দুই বছরে ১,৫০০০০টি শিশুকে প্রাক প্রাথমিক ও নৈতিকতা শিক্ষা, ১০,২৯০০০ জন কিশোর কিশোরীকে সহজ কুরআন ও নৈতিকতা শিক্ষা এবং ৩৮,৪০০ জন নিরক্ষর বয়স্ক ব্যক্তিকে অক্ষরজ্ঞানদানসহ নৈতিকতা শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার এবং দুঃস্থ পুনর্বাসনের লক্ষ্যে মোট ৪২,৯৮,৮৬০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে হজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে সকল হজযাত্রীর অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। প্রত্যেক হজযাত্রীকে এসএমএস এর মাধ্যমে হজ পূর্ব ৬টি নোটিফিকেশন প্রেরণ এবং মোবাইলের TVR সিস্টেমের মাধ্যমে হজ বুলেটিন ও তথ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
সংস্কৃতিঃ
জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ১৫ জন সুধীকে একুশে পদক ২০১৫ প্রদান করা হয়েছে। ২০১৪ এ বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সংস্কৃতি বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক এবং ২০১৫ এ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৫-১৭ মেয়াদে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেসরকারি পাঠাগার অনুদান খাতে ১ হাজার ২৫টি পাঠাগারে ২ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এছাড়া চারুশিল্প, থিয়েটার ইত্যাদি খাত থেকে ৪ কোটি ৮৬ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা দেশের ১,১৭৪টি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অনুদান প্রদান করা হয়।
পানি সম্পদঃ

গত ২ বছরে ১৯২.৪২ কিলোমিটার নদী খনন/ড্রেজিং সমাপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাপিটাল (পাইলট) ড্রেজিং অফ রিভার সিস্টেম ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় যমুনা নদীতে ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় পরীক্ষামূলক ড্রেজিং সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাপ্ত ড্রেজড ম্যাটেরিয়ালস দ্বারা সিরাজগঞ্জ শহর সংলগ্ন নদী তীরবর্তী অংশে চারটি ক্রসবার নির্মাণ করা হয়। এতে প্রায় ১৬ বর্গকিলোমিটার ভূমি স্থায়ীভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়। উপকূলীয় এলাকায় নতুন জেগে উঠা চরে সমাপ্তকৃত চর ডেভেলপমেন্ট ও সেটেলমেন্ট প্রকল্পসমূহের আওতায় ১৭,৫৩৩ ভূমিহীন পরিবারকে ১৪,৭৯২ হেক্টর জমি স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়াঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও খেলাধূলার প্রতি তাঁর বিশেষ অনুরাগের ফলে ক্রিকেট আজ বাংলাদেশকে বিশ্বে পরিচিত করে তুলেছে। ওয়ার্ল্ড টি টুয়েন্টি বাংলাদেশ ২০১৪ ও এশিয়া কাপ ক্রিকেট ২০১৪ এর সফল আয়োজন করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনুর্ধ্ব ১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা অর্জন করে এবং বিশ্ব হকি লীগের প্রথম পর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। দেশের দরিদ্রতম ১৭টি জেলার ১৭টি উপজেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং ১৪,৭১৮ জনকে প্রশিক্ষণ শেষে অস্থায়ী কর্মসংস্থানে নিযুক্ত করা হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশের দরিদ্রতম ২০টি উপজেলায় এ কর্মসূচী বাস্তবায়নে নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, দূরদর্শীতা ও রাষ্ট্রনায়কোচিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবার দ্বারপ্রান্তে। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক দুই মেয়াদে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশ হিসাবে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিচিতি পাবে- এলক্ষ্যে মহাজোট সরকারের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে।