Tuesday, July 23, 2013

‘আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনুন, বাংলার চেহারা পাল্টে দেব।

‘আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনুন, বাংলার চেহারা পাল্টে দেব।


সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনুন, বাংলার চেহারা পাল্টে দেব। আমার কাছে তথ্য আছে, আগামীতে আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। আমি বিএনপির মিথ্যা প্রচারণা মোকাবিলা করতে এসেছি।’
সজীব ওয়াজেদ বলেন, এখন থেকে আগামী ছয় মাস বিএনপির দুর্নীতি, অপশাসন তুলে ধরুন। তাঁদের অপকর্মের কথা মানুষকে মনে করিয়ে দিন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে দেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে।

সজীব ওয়াজেদ বলেন, সাড়ে চার বছর ধরে আওয়ামী লীগ দেশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। এখন আর মানুষকে লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ পোহাতে হয় না। আওয়ামী লীগই বিদ্যুত্ সমস্যার সমাধান করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে নতুন কোনো বিদ্যুেকন্দ্র বানাতে পারেনি। জনগণের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আপনারা বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের দুই টার্ম তুলনা করে দেখেন, কারা বেশি উন্নয়ন করেছে। আওয়ামী লীগ এক টার্মে যে উন্নয়ন করেছে, বিএনপি দুই টার্মেও সে উন্নয়ন করতে পারেনি।’
সজীব ওয়াজেদ বলেন, বিএনপির আমলে হল-মার্ক, ডেসটিনির মতো দুর্নীতি করলেও কেউ গ্রেপ্তারও হতো না। এমনকি এসব কথা বলাও যেত না। দুর্নীতিতে বাংলাদেশ এক নম্বর ছিল। ব্যবসায়ীদের চাঁদা জমা দেওয়ার জন্য হাওয়া ভবন সৃষ্টি হয়। খাম্বার কথা কেউ ভুলে যায়নি।
জয় বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে কাউকে চাঁদা দিতে হয়নি। হাতিরঝিলের মতো স্থাপনার কারণে ঢাকাকে আন্তর্জাতিক শহর মনে হয়। তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আমরা সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছি। এভাবে অর্থনীতি এগোলে আমাদের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন হবে। আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর বিএনপির আমলে হয় শুধু দুর্নীতি।’ ২০০১ সালে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের জন্য চারদলীয় জোট সরকারকে দায়ী করেন জয়।
 প্রধানমন্ত্রীপুত্র বলেন, ‘২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার কথা ভুলে যায়নি। ওই সময় আমার মাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৩ জনকে হত্যা করা হয়। চার শ জন আহত হয়। তত্কালীন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র এতে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেটা দুঃখজনক।’

Wednesday, July 17, 2013

রাষ্ট্র বনাম মির্জা ফখরুল ইসলাম


কয়েকদিন আগে আমাদের দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং একই সঙ্গে আমার পছন্দের একটি দৈনিক পত্রিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্বনামধন্য অধ্যাপক ‘রাষ্ট্র বনাম মির্জা ফখরুল’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। ওই নিবন্ধে লেখক সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী এবং বিএনপি দলটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের চারিত্রিক গুণাবলী সম্পর্কে প্রশংসামূলক অনেক কথাই লিখেছেন। সবকিছুর উত্তর দেয়ার আমার কোন ইচ্ছা নেই। তবে এমন সম্মানিত ব্যক্তির শুধু একটি বিষয়ে আমি মৃদু প্রতিবাদ করছি। 
রাষ্ট্র বনাম মির্জা ফখরুল ইসলাম
আলমগীর সাত্তার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (সব অধ্যাপকই আমাদের মতো আমজনতার কাছে বিশেষ শ্রদ্ধার পাত্র) সাহেব তার নিবন্ধের এক জায়গায় লিখেছেন, মির্জা সাহেব খালেদা জিয়ার আমলে প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অনিয়মের কোন অভিযোগ কখনও উচ্চারিত হয়নি। কথাগুলো পড়ে রবিঠাকুরের গানের একটি কলি মনে পড়ে গেল ‘সখী ভালোবাসা কারে কয়!’ ওই গানের কলিটি স্মরণ করে এবং শ্রদ্ধেয় অধ্যাপকের লেখাটা পড়ে, বলতে ইচ্ছা করে, সখী মিথ্যা কাহারে কয়!
অ ঢ়ড়ষরঃরপরধহ রং বরঃযবৎ ধ মবহঃষবসধহ ড়ৎ ধ ংপযড়ষধৎ, নঁঃ ড়ভঃবহ পড়সনরহবং ঃযব ড়িৎংঃ ড়ভ বধপয. অধ্যাপক সাহেব তার লেখা নিবন্ধে যাদের অনেক প্রশস্তি গেয়েছেন তাদের প্রসঙ্গে কিন্তু কথাগুলো বলছি না। কেবল মনে পড়ে গেল, তাই লিখলাম। এ কথাগুলো কোন বইয়ে পড়েছিলাম, তাও মনে করতে পারছি না। 
এবার বিমানের প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে মির্জা সাহেব বিমানের কতটা ক্ষতি করে গেছেন, তার একটা উদাহরণ দেয়া যাক। 
বেগম খালেদা জিয়া ২০০১ সালে দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কিছুদিন পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো বাংলাদেশ বিমানের জন্য ১১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ১০ খানা নতুন এ্যারোপ্লেন কেনা হবে। বিমানের ফ্লিট প্ল্যান কমিটি তাদের বিদ্যার সীমাবদ্ধতা নিয়ে অনেক গবেষণা করে এবং অনেক সময় ব্যয় করে ২০০৩ সালের শেষদিকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে: নতুন প্লেনগুলো বোয়িং কোম্পানি থেকেই কেনা হবে। বিমানের বোর্ড সভায় তা অনুমোদিত হলো। 
তারেক রহমান জানতেন না, বোয়িং কোম্পানি থেকে প্লেন কিনলে কোন কমিশন পাওয়া যাবে না। আমেরিকার ফেডারেল আইন অনুযায়ী ওই দেশের কোন কোম্পানি বিদেশে কিছু বিক্রি করার জন্য কাউকে কোন কমিশন দিতে পারবে না। কিন্তু অনুদান দিতে পারে। ওই অনুদান আবার ব্যক্তি বা কোন গোষ্ঠীকে দেয়া যাবে না। ব্যাপারটা জানার পর তারেক রহমানের তো আক্কেলগুরুম। এত বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে এ্যারোপ্লেন কিনব, অথচ কোন কমিশন পাওয়া যাবে না, তা কি হয়! তবে আর প্লেন কিনে লাভ কি? তারেক রহমান তখন তখনকার বিমানের প্রতিমন্ত্রী মীর নাসিরকে বললেন, আমরা বোয়িং কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কিনব না। আমরা কিনব, এয়ার বাস কোম্পানি থেকে প্লেন। মীর নাসির পড়ে গেলেন মহাবিপদে। বিমান বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে, সব বোর্ড সদস্যের সম্মতিক্রমে তিনি বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছেন। এখন কোন অজুহাত দেখিয়ে বোয়িং প্লেনের পরিবর্তে এয়ারবাস এ্যারোপ্লেনের পক্ষে নিজের সিদ্ধান্ত বদলাবেন?
তারেক রহমান তার মাকে বলে মীর নাসিরকে মন্ত্রিত্বের পদ থেকে অপসারিত করে নিজের একান্ত অনুগত মির্জা ফখরুল ইসলামকে বিমানের প্রতিমন্ত্রী পদে নিয়োগদানের ব্যবস্থা করলেন। মির্জা সাহেব প্রতিমন্ত্রী হয়েই বিমানের ফ্লিট প্ল্যান কমিটিকে নির্দেশ দিলেন, বোয়িং প্লেন বাদ দিয়ে এয়ারবাস প্লেন কেনার জন্য নতুন করে পরিকল্পনা করতে। ব্যাপারটা সহজ ছিল না। এক বছরেরও বেশি সময় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত, যাত্রী বহনের উপযুক্ততা, সিট-মাইলের কস্ট বা মূল্য ইত্যাদি হিসাব করে তৈরি করা ফ্লিট প্ল্যান বললেই তো আর রাতারাতি পরিবর্তন করা যায় না। তবু ফ্লিট প্ল্যান কমিটি অনেক রকমের যুক্তিতর্কের উপস্থাপনা করে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আপতত ৪ খানা বিভিন্ন মডেলের এয়ারবাস প্লেন ক্রয় করা হবে। বোয়িং প্লেনের বিষয়টা পরে দেখা যাবে। 
এ্যারোপ্লেন ক্রয় করার জন্য বিদেশী ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অর্থ সংগ্রহের ব্যবস্থাও করা হলো। কিন্তু বিদেশী ব্যাংকগুলো চাইল, বাংলাদেশ ব্যাংক কম করে হলেও উড়োজাহাজগুলোর মোট মূল্যের ১৫ শতাংশ পেমেন্টের গ্যারন্টার হতে হবে। 
প্রয়াত সাইফুর রহমান সাহেব তখন বিএনপি সরকারের অর্থমন্ত্রী। সিলেট বিমানবন্দরের উন্নয়নের জন্য তখন ২৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। ওই প্রকল্পের কাজটি পাওয়ার জন্য বিএনপি দলের গুম হওয়া নেতা ইলিয়াস আলী সমর্থিত একটি গ্রুপ ছিল। অন্য আর একটি গ্রুপ ছিল সাইফুর রহমান সাহেবের বড় পুত্র নাসের রহমান কর্তৃক সমর্থিত। সাইফুর রহমান সাহেব স্বাভাবিকভাবেই চেয়েছিলেন তার ছেলের সমর্থক গ্রুপটি কাজটি পাক। ইলিয়াস আলীর পেছনের জোরটা ছিল তারেক রহমানের আশীর্বাদ। এই সমর্থন, আর্শীবাদ ইত্যাদির সঙ্গে অবশ্যই জড়িত ছিল বড় অংকের অর্থকড়ি। বিষয়টা উল্লেখ না করলেও চলত। যা হোক, শেষ পর্যন্ত ইলিয়াস আলী গ্রুপই প্রকল্পের কাজটি পেয়ে যায়। এতে করে সাইফুর রহমান সাহেব তো রেগেমেগে একাকার। রাগান্বিত হয়ে প্রথমে তো তিনি পদত্যাগের হুমকি দিলেন। তিনি কেন পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন, তা তো দেশবাসীও জানতে পারল না। কিন্তু কেন পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন, দেশবাসী অবশ্যই তা জানতেন না।
বার্ষিক বাজেট উপস্থাপনের আগে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের হুমকি বিএনপি দলটির নীতিনির্ধারকদের চিন্তায় ফেলে দিল। কিন্তু পদত্যাগের কথা বললেই তো তা করা যায় না। সাইফুর রহমানের পুত্রধনরা তো সততার ব্যাপারে ধোয়া তুলসীপাতা ছিলেন না। পুত্রধনদের তো তারেক রহমানের আক্রোশ থেকে বাঁচাতে হবে! অর্থমন্ত্রী সাহেব আর পদত্যাগ করলেন না। 
সাইফুর রহমান সাহেব পদত্যাগ করলেন না বটে, কিন্তু উড়োজাহাজ কেনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি দেয়ার কাজটা বন্ধ রাখলেন। তিনি গ্যারান্টির চিঠি ইস্যু করতে সরাসরি অস্বীকার না করে নানা টালবাহানা করে কাজটি বিলম্বিত করতে শুরু করলেন। টালবাহানার ধরনটা ছিল এমন যে, দরকষাকষি করে উড়োজাহাজের দাম কিছুটা কমানো যায় কিনা। এমন মহৎ প্রচেষ্টাÑ কোন মডেলের উড়োজাহাজ বিমানের জন্য বেশি উপযোগী হবে, এমন ধরনের প্রশ্নের সদুত্তর চাচ্ছিলেন। এমনি করে কালক্ষেণ করতে করতে বিএনপি দলটির ক্ষমতাসীন থাকার সময় ফুরিয়ে গেল। 
এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারেক রহমান এনারা চুপচাপ বসে ছিলেন না। পুরনো ডিসি-১০ প্লেন দিয়ে যে বাংলাদেশ বিমান চালিয়ে রাখা সম্ভব নয় এবং জরুরী ভিত্তিতে যে নতুন এ্যারোপ্লেন কিনতে হবে, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে মির্জা ফখরুল এবং জিয়াপুত্র ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখলেন। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এক এক করে বিমানের ৫ খানা ডিসি-১০ প্লেনের মধ্যে ৪ খানাই অচল করে রাখলেন। ওই সময় উক্ত প্লেনগুলো ভাল সার্ভিসই দিচ্ছিল। বিমানের কোন গন্তব্যে যেতেই ডিসি-১০ প্লেনগুলোর কোন বাধা ছিল না। ওই প্লেনগুলোর ইঞ্জিনের ডি-চেক করার তখন ব্যবস্থা করা হয়েছিল হল্যান্ডের ডাচ এয়ারলাইনের সঙ্গে। পরে ব্যবস্থা করা হয় জার্মানির একটি কোম্পানির সঙ্গে। ডিসি-১০ প্লেনের এক একটা ইঞ্জিন ডি-চেকের জন্য বিদেশে পাঠানো হয়, কিন্তু মেইন্টেন্যান্সের অর্থ পরিশোধ করে সেগুলো আর ফেরত আনা হয় না। এক এক করে এমনিভাবে ডিসি-১০ প্লেনের ১০টি ইঞ্জিন বিদেশে পড়ে রইল। ফলে ৫ খানার মধ্যে ৪ খানা ডিসি-১০প্লেন আর উড্ডয়নক্ষম রইল না। এর চাপ পড়ল বিমানের তখনকার ৩ খানা এয়ারবাস এ্যারোপ্লেনের ওপরও। এমনি করে বিমানের সমস্ত সিডিউল ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ল। 
২০০৬ সালে মির্জা সাহেব যখন বিমানের প্রতিমন্ত্রী তখনকার কয়েকটি দিনের ফ্লাইট সিডিউলের বিপর্যয়ের খ-কালীন একটি চিত্র তুলে ধরছি: ২০০৬ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি মাত্র এক সপ্তাহের চিত্র। উক্ত এক সপ্তাহে বিমানের ৪১টি ডিসি-১০ প্লেনের ফ্লাইটের একটি ফ্লাইটও সময়মতো ছাড়তে পারেনি। মাত্র একটি ফ্লাইট অল্প বিলম্বে ছেড়েছিল। বাকি ৪০ টি ফ্লাইট অনেক বিলম্বে ছেড়েছে অথবা ক্যান্সেল হয়েছে। ওই একই সময় এয়ারবাস-৩১০ প্লেনের ১১৬টি ফ্লাইটের মধ্যে মাত্র ১৭% ফ্লাইট নিয়মিত সময় চলাচল করেছে। এর পরের সপ্তাহে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি ডিসি-১০ প্লেনের ৬৭টি ফ্লাইটের মধ্যে মাত্র একটি ফ্লাইট সময়মতো ছেড়েছিল। এয়ারবাস প্লেন দিয়ে পরিচালিত ৯৬টি ফ্লাইটের মধ্যে মাত্র ১৬টি চলেছিল নিয়মিত সময়ে। ওই সময় একটানা ২১ দিন সময় যাবত বিমানের ডিসি-১০ প্লেনের কোন ফ্লাইটই সময়মতো চলাচল করেনি। 
ডিসি-১০ প্লেনের ১০টি ইঞ্জিন ইচ্ছাকৃতভাবে বিদেশে ফেলে রাখা এবং ফ্লাইট সিডিউল সংক্রান্ত যে সব তথ্য পরিবেশন করা হলো, সে সবের রেকর্ড, কাগজপত্র সবই বিমান অফিসে আছে। তাই এ লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটু খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করলেই এ সবের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। 
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সময় নিউইয়র্কে নর্থ আটলান্টিক ট্রাভেল এজেন্সি নাম দিয়ে বিএনপিঅলাদের কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি মিলে একটি সিন্ডিকেট করে। মির্জা সাহেব বিমানের নিউইয়র্ক অফিসকে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিলেনÑবিএনপিঅলাদের ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ছাড়া অন্যরা বিমানের টিকেট বিক্রি করতে পারবে না। ওই ট্রাভেল এজেন্সিগুলো নিউইয়র্ক-ঢাকা-নিউইয়র্কের জন্য নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অনেক বেশি ভাড়া আদায় করত। ফলে ঢাকা-নিউইয়র্কের মধ্যে বিমানের যাত্রী কমতে শুরু করল। এক পর্যায়ে বিমানের ঢাকা-নিউইয়ের্কের ফ্লাইটই বন্ধ করে দিতে হলো। 
এ সব ছাড়া মির্জা সাহেবের মন্ত্রিত্বের সময়ের অন্যান্য দুর্নীতির বিষয় আলোচনা করলাম না লেখাটার কলেবর বৃদ্ধি না করার ইচ্ছা থেকে। আমার বক্তব্য হলো, বাংলাদেশ বিমানের বর্তমান বেহাল অবস্থার সূচনাটা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই করে গেছেন। একবার যদি কোন এয়ারলাইন্সের ওপর যাত্রীরা আস্থা হারিয়ে ফেলে, তবে ওই এয়ারলাইন্স আর সহজে ঘুরে দাঁড়াতে পারে না। 
শুনেছি ম্যাকারেল মাছের পচন ধরলে ওগুলোকে নাকি বেশি শাইনিং (ঝযরহরহম) দেখায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অধ্যাপক লিখেছেন যে, বিমানের প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে মির্জা সাহেবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বা অনিয়মের কোন অভিযোগ ছিল না। তাকে শুধু বলব, যে পত্রিকায় তিনি নিবন্ধটি লিখেছেন ওই পত্রিকাসহ অন্যান্য ওই সময়ের পত্রিকাগুলো যেন পড়ে দেখেন। আমার বক্তব্য হলো, আপনার লেখার স্বাধীনতা আছে। পা-িত্য আছে। আপনি সুলেখকও বটে। তাই লিখুন। 

লেখক : সাবেক বৈমানিক ও মুক্তিযোদ্ধা

Monday, July 1, 2013

ক্ষমা চাই সকলের কাছে।

ক্ষমা চাই সকলের কাছে। সবাই আমাকে নিজগুনে ক্ষমা করবেন। আসলে আমি কেউ না এ দেশের ভালো মন্দ আয় ব্যয় উন্নতি অবনতি ধংশ বা নির্মাণে ।আমার কোনো অবদান নেই এ দেশের জন্য। আমি শুধু পথের ধারে অযত্নে বেড়ে ওঠা দলিত মথিত দূর্বা ঘাস। আমি একটি রাস্তার নেড়ে কুকুর। মূর্খ অথর্ব বাচাল প্রকৃতির একটি বাজে লোক। আমি আমার নিজেকেই ঘৃণা করি মনে প্রাণে।আত্বহত্যা মহা পাপ এবং মহান আল্লাহ্‌ তায়া'লার কাছে গিয়ে কোনো জাবাদিহীতার রাস্তা থাকবে না। দুটি কন্যা সন্তান বেড়ে ঊঠেছে অযতনে মূর্খ ব্যর্থ পিতার সন্তান হিসেবে।
শুনিতে চেওনা কোথায় কষ্ট কোন সে গোপনকথা!
শুনিয়া হাসিবে মুচকি হাসি, নয়তো পাইবে ব্যাথা।
নয়তো বলিবে, আসলেই সত্যি বদ্ধ পাগল মুক্তি,
নাহি কথার সামঞ্জস্য নাহি কোনো যুক্তি ।
এ দেশ স্বাধীন করেছিলো সেনা বাহিনী। যুদ্ধের পূর্বেই যারা সশস্ত্র জীবন যাপনে অভ্যস্ত। দেশ স্বাধীন করেছে তারাই। সাতজন বীর শ্রেষ্ঠও সেনা বাহিনীর সদস্য। হতভাগা জাতিরজনককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, সেও সেনাবাহিনী। মঞ্জুর, জিয়া, খালেদ মোশাররফ, কর্নেল তাহের, তাজুদ্দিন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপঃ মনসুর আলী, কামরুজ্জামানসহ হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা বিচারে রুদ্ধ কারাগারে হত্যা করেছে, সেটাও সেনা বাহিনী। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ৪০ বছরের মধ্যে মাত্র সাড়ে সাত বছর দেশ শাসন করেছে জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার আর বাদ বাকী সাড়ে ৩২ বছর বৈধ এবং অবৈধভাবে দেশ শাসন করেছে সেনা বাহিনী। কোথায় গণতন্ত্রের শিশু, তাকেতো হাটতেই শিখানো হয়নি? দেশের সমস্ত সরকারী আধা সরকারী স্বায়ত্বশাসিত প্রধান প্রধান প্রতিষ্ঠান গুলোর কর্ণধার বর্তমান অথবা অবসর গ্রহণকৃত সেনা কর্মকর্তা। দেশ বিদেশের দূতাবাসগূলোতে চাকুরীর সুবিধাদিসহ প্রেষণে নিয়োগ পেয়েছে সেনাবাহিনী। কাজেই মুক্তিযুদ্ধ এবং তার সকল মহিমা সেনাবাহিনীরই প্রাপ্য। বাকী সব ছাগলের তিন নম্বর বাচ্ছা। উচ্চ শিক্ষিত, মেধাসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে পাশ করা যুব গোষ্ঠী ভালো চাকুরী না পেলেও, অবসরপ্রাপ্ত সেনা বাহিনী ঠিকই চুক্তিভিত্তিক উচ্চ পদসমূহে নিয়োগ পেয়েছে। কারন তারাই এ দেশ স্বাধীন করেছে। বাকী আমরা যারা বাঙ্গালী, তারা অকালকুসুমন্ড তথাকথিত ভোদাই সম্প্রদায়। তারেক জিয়া দুর্নীতি লুন্ঠণ করেছে, পত্রপত্রিকা দেশবিদেশে ছড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এ কি হচ্ছে, তা জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত জানতে পারছে না। এ কথা আমি মুক্তি বলবার কে? আমি বলবোই বা কেনো। দুর্নীতি দমন কমিশনের এক কর্মকর্তা আমাকে একটি দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্তের সাক্ষী হিসেবে ডেকেছিলো এবং ধমকিয়ে ওই তদন্ত কর্মকর্তা আমাকে শাসিয়েছিলেন " যে ব্যক্তি সরকারি অর্থ তছরুপ করেছে, সেটা সরকারের অর্থ, আপনার কি? আপনি কে অভিযোগ করতে? আপনার এতো মাথা ব্যথা কেনো। আলবৎ সত্য কথা। আমি কে? আমি কেনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলাম? আমিতো একটা stupid! আর কিছু নয়। আমার কি আসে যায় যদি সরকারের টাকা লুটপাট হয়? আমার এই ষাট বছরের কাছে এসে শুভ বুদ্ধির ঊদয় হয়েছে। এতো দিনে বুঝলাম এ সমাজে, এ দেশে, এ মাটিতে আমি একটি পদার্থহীন অপদার্থ। নিজেকে বিরাট একটা কিছু মনে করতাম। গায় পড়ে পথের কাঁটা নিজের কাঁটা মনে করে মানুষের সাথে অহেতুক ঝগড়া ফেসাত দাঙ্গা হাঙ্গামা বাক বিতন্ড যুক্তি তর্ক বিতর্ক আর স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা, রাজাকার, বিএন পি জামাত যতো সব অহেতুক বিষয়াদি নিয়ে অযৌক্তিক এবং উদ্ভট অসামঞ্জস্য কথা বার্তা বলে বেড়াতাম। কিন্তু আসল বিষয়টা ছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন।
আমি কেউ না বাংলাদেশের। আমার পিতা মাতার বিশেষ উত্তেজনার ফসল মাত্র আমি জন্মেছিলাম বাংলার একটি অখ্যাত নিভূত পল্লীর জীর্ণ কুঠিরে। সংসারে সকলের ছোট হয়েও উচ্চ শিক্ষার মূখ দেখতে পাইনি আমার এই প্রচন্ড দাপট বাউন্ডেলেপনার জন্য। কোন রকম পেটে ভাতে খেয়ে পড়ে অনেক কষ্টে কিছু মুল্যহীন সনদপত্র যোগার করেছিলাম। সেও মনে হয় বোর্ড অফ এডুকেশনের ভুলের কারনে পেয়েছিলাম। 
যেদিন হাওয়া ভবন এর সন্ত্রাসীদের হাতে বেদমভাবে প্রহৃত হ’লাম, জীবন ভিক্ষা চেয়ে প্রান বাচালাম সেদিনই আমি বুঝেছিলাম, আমি এ দেশে অকালকুসুমন্ড মূল্যহীন একটি অযাচিত জঘন্য ঘৃণ্য অতিকায় তুচ্ছ  নরকের কীট। তাই স্ত্রী সন্ডানদের ফেলে নিজের জীবন নিয়ে পালিয়ে এলাম। এসে ভাবলাম আমার কথা গুলো অন্তত বিশ্বকে জানানো উচিত। আমার জানাবার ভাষা এবং উপস্থাপনে হয়তো বা কোনো আর্ট ছিলো না কিন্তু সত্যতা ছিলো সম্পূর্ণ ১০০ ভাগ। আমার জন্মভূমি আমি ছেড়ে এলেও আমার বিধির বিধান ভাগ্য লিখনতো আমার সাথে সাথেই মায়া মরীচিকার মতোই তাড়া করেছে, আমি পালাতে চাইলেও আমার ভাগ্যের লেখা অনুযায়ী ওরা তো আমার পিছু ছাড়েনি।
এই মিডিয়া জগতে কতো জনেরে একান্তভাবে পেয়েছি, কতজনেরে মিথ্যে কারনে মিথ্যে অজুহাতে অশ্রাব্য ভাষায় তিরস্কার করেছি। আসলে আমিতো কেঊ না ও কথা বলার যে কথা আমি একান্ত আমার এবং দেশের শ্ত্রু মনে করে অপরজনকে বলেছি। ওরা শত্রু হবে কেনো? এটাইতো ছিলো আমার সব চেয়ে বড় আহাম্মকী এবং ডাষ্টবিনে নিক্ষেপিত হবার মুল কারন। শ্ত্রুতো আমি আমার নিজের। শ্ত্রু আমি সকলের। শ্ত্রু আমি বাঙ্গালী জাতির। শ্ত্রু আমি মিডিয়া জগতের সকলের। আমাকেইতো আমার ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে শাস্তি দিতে ইচ্ছে হচ্ছে। 
বন্ধুগণ, আমাকে আপনারা মনে রাখবেন না। ভূলে যাবেন। যদি কখনো কারো মনে কোন কষ্ট দিয়ে থাকি। কাউকে স্বাধীনতা বা বঙ্গবন্ধু সংক্রান্ত কারনে কোনো কটু কথা বা গালি দিয়ে থাকি, আমাকে আপনারা ক্ষমা করে দিবেন। যদি শুনতে পান কোনো মাধ্যমে যে ‘মুক্তি নামের সে শুয়োরটা আর বেঁচে নেই’, আমাদের আর জ্বালাতন করবে না, সেদিন আমার বেহেস্ত নছিবের জন্য না হলেও নরকের শাস্তি মৌকুফের জন্য পারলে দোয়া করবেন।
“ অন্ধকারে এসেছিলেম, থাকতে আধার যাই চলে,
ক্ষণিক ভালো বেসে ছিলেম, চির কালের নাই হলেম।
আপনারা ভূলে যাবেন আমার এ বেসুরো বেতাল গানের কোনো একটি লাইনও যদি আপনাদের কারো কাছে কোনো মুহূর্তে ভালো লেগে থাকে?  
আমার আপন বড় ভাইকে হারানোর পর এই নেট ওয়ার্কের মিডিয়ার মাধ্যমে বড় ভাই হিসেবে শহীদুল আলম ভাইজান কে পেয়েছিলাম,  যদি জীবনে একবার দেখা না পাই বড় কষ্ট থেকে যাবে তার জন্য । কারো কোন করুনা চাই না। দয়া চাইনা, চাইনা কোন ভিক্ষার অনুকম্পা।
“যেহেতু দেশকে জাতিকে নিজে কিছুই দিতে পারিনি, তখন চাইবারও কোনো অধিকার আমার নেই।
“শুধু আর একবার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আমার শুষ্ক ওষ্ঠাধর থেকে নিক্ষেপ করে গেলাম...বাঙ্গালী জাতির জন্য . the ungrateful nation